আগামী অর্থবছরে (২০১৮ ২০১৯) দুদকের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। গত অর্থবছরে সংস্থাটির জন্য ১০১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও নতুন অর্থবছরে সংস্থাটির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১১৮ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার (৭ জুন) জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ বরাদ্দ দেওয়া হয়।
প্রস্তাবিত বাজেট বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, দুদকের জন্য বরাদ্দ ১১৮ কোটি টাকা। যার মধ্যে পরিচালনা ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৯ কোটি ও উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ ছিল ১০১ কোটি টাকা। যা পরবর্তীতে সংশোধন করে করা হয় ৯৪ কোটি টাকা।
বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘দেশকে ক্রমান্বয়ে সব ধরনের দুর্নীতি থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাভাবিক আইনগত কার্যক্রম চলমান রাখার পাশাপাশি গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং দুর্নীত বিরোধী মনোভাবসম্পন্ন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর মাধ্যমে জবাবদিহিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সমাজের সৎ ও স্বচ্ছ ব্যক্তিদের নিয়ে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ক্রিয়াশীল দুর্নীতি দমন কমিটিসমূহ বিভিন্ন ধরনের প্রচারণামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব গড়ে তোলার লক্ষ্যে সারাদেশের প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল ও মাদ্রাসাসহ সব উপজেলার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ‘সততা সংঘ’ গঠন করে শুদ্ধাচার চর্চার প্রসার ঘটানো হচ্ছে।’
বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করার জন্য গণশুনানি, সারাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিং, দুদকের হটলাইন ১০৬ চালু করার মাধ্যমে জনগণ সরাসরি বিভিন্ন অভিযোগ করতে পারছে।
দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের উপায় বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের প্রধান উপায় হচ্ছে বিভিন্ন সিদ্ধান্তে ব্যক্তির বিবেচনার ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনা। তাই যেখানেই সুযোগ আছে সেখানেই তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে নানরকম আর্থিক লেনদেনে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার দুর্নীতির ব্যাপকতাকে প্রতিরোধের সুযোগ করে দেয়। ’
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান অত্যন্ত দৃঢ় বলে বক্তব্যে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট করাপশন এর রাষ্ট্রপক্ষ হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দৃঢ়তার সঙ্গে দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছে। এর ফলে দুর্নীতি বা অর্থ পাচার সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্র হতে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্স রিকোয়েস্ট এর মাধ্যমে বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির অর্থপাচার সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।’