নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিশুরা পুলিশের নৈতিক ভিতকে জাগিয়ে তুলেছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।
ডিএমপি কমিশনার ঘোষণা দেন, রোববার (আজ) থেকে ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করবে পুলিশ। এ সময় গাড়ির চালকের লাইসেন্স, ফিটনেসবিহীন গাড়ি আটকসহ ট্রাফিক আইনে যা যা করণীয়, সব করা হবে। এ ক্ষেত্রে কোমলমতি শিশুরা সাহায্য করতে চাইলে তাদের স্বাগত।
ডিএমপি কমিশনার বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। সেই ক্ষমতাবলে সারা দেশে সব সদস্যকে নির্দেশ দিয়েছেন। ডিএমপি কমিশনার বলেন, রোববার থেকে ৭ দিন সারা দেশে ট্রাফিক সপ্তাহ ঘোষণা করা হল। পুলিশ সদস্যরা যানবাহনের বৈধতা, মেয়াদ, ফিটনেস, চালকের লাইসেন্স যাচাই-বাছাই করবেন। ট্রাফিক সপ্তাহে গার্ল গাইডস ও বয়েজ স্কাউটের সহায়তা নেয়া হবে। আমাদের কোমলমতি শিশু, তরুণেরা যা করেছে তাকে স্যালুট। তারা ট্রাফিক সপ্তাহে সহায়তা করতে চাইলে তাদের স্বাগত। তারা পুলিশের নৈতিক ভিতকে জাগিয়ে তুলেছে, অনেক শক্তিশালী করেছে, চোখ-কান খুলে দিয়েছে। তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। তবে এখন তাদের ঘরে ফিরে যাওয়া উচিত।
একটি পক্ষ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে নাশকতা চালাতে তৎপর রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, একটি পক্ষ চাইছে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে যেন সরকার বেকায়দায় পড়ে। আমাদের পুলিশ বাহিনী তা সফল হতে দেবে না। এ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এবং নাশকতামূলক কিছু করতে স্কুল ড্রেস সরবরাহ করছে। অনেক বহিরাগত স্কুল পোশাকে ঢুকে পড়ছে। কিছু লোক আন্দোলনকারীদের রাস্তায় খাবার সরবরাহ করছে।
এদের মধ্যে কয়েকজনকে শনাক্ত করা গেছে, অন্যদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য মহৎ। কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী এই আন্দোলনকে ‘পলিটিসাইজড’ করার চেষ্টা চলছে। এ কারণে আমরা ছাত্রদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা নোংরা ভাষায় লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াচ্ছে। আমরা অভিভাবক ও শিক্ষকদের এ বিষয়টি লক্ষ্য রাখার অনুরোধ করছি।
এই আন্দোলনে পুলিশ যথেষ্ট ধৈর্য ধারণ করেছে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ২৯ জুলাই থেকে আমরা ধৈর্য ধারণ করেছি। এরপরও দেখলাম রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে হামলা হয়েছে, মিরপুর পুলিশ লাইন্সে হামলা হয়েছে, কাফরুল থানায় হামলা হয়েছে।
আমার ৩১ বছরের চাকরিজীবনে কখনও রাজারবাগে হামলা হতে দেখিনি। স্বার্থান্বেষীরা এই হামলা চালাচ্ছে, উসকানি দিচ্ছে। আমি সব পুলিশ সদস্যকে কোনো প্রকার উসকানিতে কান না দিতে বলেছি। বিমানবন্দর সড়কে দুর্ঘটনার মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান আছাদুজ্জামান মিয়া।