আশুলিয়ায় শিক্ষার্থীকে শিবির, জঙ্গি ও চোরসহ বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ এনে তাদের মারধর করে ল্যাপটপ কেড়ে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগে এক এএসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্যের নাম মামুন হোসেন। ঘটনার সময় তিনি আশুলিয়া থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পদে কর্মরত ছিলেন।
ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশের সোর্স আব্দুর রাজ্জাক খান নামে এক ছিনতাইকারীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। পরে থানায় দুটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত ৮টায় আশুলিয়ার নয়ারহাট এলাকার কোহিনুর গেট সংলগ্ন জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (নিটা) শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান (২২) তার ল্যাপটপ বিক্রি করার জন্য অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেন। এটি দেখে ক্রেতা সেজে ওই শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে মারধর করে ল্যাপটপটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন আশুলিয়া থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মামুন হোসেন।
আব্দুল্লাহ আল নোমান নিটার বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে শিক্ষার্থী। আটককৃত ছিনতাইকারী আব্দুর রাজ্জাক খান সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানাধীন ভেড়াকোলা পূর্বপাড়া এলাকার সাদেক আলী খানের ছেলে।
আশুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, নিটার শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান তার ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ বিক্রয় করার জন্য গত ৩০ জুলাই অনলাইন শপিং পোর্টাল বিক্রয়.কম-এ বিজ্ঞাপন দেন।
ওই বিজ্ঞাপনের সূত্র ধরে আশুলিয়া থানার এএসআই মামুন হোসেনসহ ৪/৫জন ক্রেতা সেজে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় আশুলিয়ার নয়ারহাট এলাকার কোহিনুর গেটে যান এবং শিক্ষার্থী নোমানকে মোবাইলে ওই গেটে ল্যাপটপ নিয়ে আসতে বলেন এএসআই।
কী হয়েছিল সেদিন?
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নোমান তার সহপাঠী মাহামুদুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে কোহিনুর গেটে যান। সেখানে যাওয়ার পরই এএসআই মামুনসহ ৪/৫জন ওই শিক্ষার্থীদেরকে শিবির, জঙ্গি ও চোরসহ বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ এনে তাদের মারধর করে ল্যাপটপ কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করেন।
একক পর্যায়ে তাদেরকে আটক করে টাকাও দাবি করেন অভিযুক্ত এএসআই। এ সময় আটক শিক্ষার্থীরা অপর শিক্ষার্থীদের ফোন করলে তারা এসে এএসআই নোমানসহ তার সঙ্গীদের ঘেরাও করে ফেলে।
পরে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে মামুন আশুলিয়া থানার এএসআই পরিচয় দিয়ে সঙ্গে থাকা পিস্তল দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের গুলি করার ভয় দেখিয়ে মাইক্রোবাস যোগে পালিয়ে যায়। এ সময় আব্দুর রাজ্জাক নামে একজনকে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা। পরে জানা যায় সে পুলিশের সোর্স।
থানায় অভিযোগ ও তদন্ত
এ ঘটনায় শনিবার ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রভাষক ও সহকারী হোস্টেল সুপারিনটেনডেন্ট হাবিব উল্লাহ আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এছাড়া ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
আশুলিয়া থানার ওসি আবদুল আউয়াল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার দুপুরে আশুলিয়ার থানার এএসআই মামুনের বিরুদ্ধে ছিনতাইচেষ্টার দুটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া অভিযোগ দুটি তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনার সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।