এক-এগারো নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো কুমতলব আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার দুপুরে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবর্ষিকী উপলক্ষে নেতাকর্মীরা জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
বিএনপি এক-এগারো নিয়ে চক্রান্ত করছে- ক্ষমতাসীনদের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি এক-এগারো করার প্রয়োজনটা কী? এর সঙ্গে বিএনপির তো কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।
তিনি বলেন, বিএনপি তো এখন ড্রাইভিং সিটে নেই। ড্রাইভিং সিটে আছে তারা (আওয়ামী লীগ)। আর এক-এগারো করার অভিজ্ঞতা তাদের। এক-এগারোর সুবিধাভোগী তারা। অযথা বিএনপিকে এর মধ্যে নিয়ে আসা মানে তাদের কোনো কুমতলব আছে।
হঠাৎ করেই এক-এগারোর আলোচনা শুরু হয়েছে- এ বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, এক-এগারোর আওয়ামী লীগের আরেকটি চক্রান্ত। সেই চক্রান্তটি হচ্ছে- বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যে পথ, সেই পথকে তারা রুদ্ধ করতে চায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর আগেও বলেছি, এক-এগারোর সুবিধাভোগী হচ্ছেন তারা। তারাই ক্ষমতায় এসেছে। আর আওয়ামী লীগই এক-এগারোর কুশীলবদের ক্ষমা করেছে। এক-এগারো সরকারের সব কর্মকাণ্ডকে তারা বৈধতা প্রদান করেছে।
‘সুতরাং আওয়ামী লীগই এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হয়। গণতন্ত্র যাতে দেশে ফিরে না আসে, সে জন্য আরেকটি চক্রান্ত করছে।’
সংলাপের কোনো পথ দেখছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সংলাপ বরাবর চেয়ে এসেছি। আমরা বলেছি- সংলাপ ছাড়া কোনো সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব নয়। তারা (আ’লীগ) দুই-একটি কথা বলে। কিন্তু কাজ তো কিছু করে না। আমরা যাতে না আসতে পারি, তার ব্যবস্থা করা।
যানজটের ফলে ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি হাচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, উন্নয়ন তো আপনাদের টেলিভিশনের পর্দায়, আর শুধু তাদের কথায়। কিন্তু আসলে মানুষের কাছে কোনো উন্নয়ন নেই। ঈদে ঘরমুখো মানুষের ১৮, ২০ ও ২৪ ঘণ্টা লাগছে বাড়ি যেতে।
এ সময় তিনি কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী সব শিক্ষার্থীকে ঈদের আগে মুক্তির দাবি জানান।
বিএনপি নানা অজুহাতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে চাচ্ছে- আওয়ামী লীগের নেতাদের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ চায় না বিএনপি নির্বাচনে আসুক। সেই জন্য তারা বিভিন্নভাবে কথাবার্তা বলে এবং সমস্যা তৈরি করে বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধাগ্রস্ত করছে।
‘কিন্তু আমরা সব বাধা অতিক্রম করে, খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করব।’
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। সংগঠনের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বেগম জিয়াকে মুক্ত করার শপথগ্রহণ করেছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকেও মুক্ত করার শপথগ্রহণ করেছে সংগঠনটি।
খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপি নেতা নাজিমউদ্দিন আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলসহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।