নগরীর রায়মহলের বাসিন্দা ও পাইকগাছা চিংড়ি চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রয়্যাল ফিস কালচারের স্বত্বাধিকারী তরুণ মৎস্য ও ঘের ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া রিপন সম্প্রতি মৎস্য খাতে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে জাতীয় মৎস্য স্বর্ণ পদক লাভ করেছেন। এই অর্জনের জন্য তিনি চীন বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোঃ ইউনুস-এর কাছ থেকে এ পদক গ্রহণ করেন। এর আগে, ১৭ জুলাই মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ভারপ্রাপ্ত ড. মোঃ আবদুর রউফ এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গোলাম কিবরিয়া রিপন নগরীর বয়রা রায়ের মহল এলাকার মৃত নজির উদ্দিন আহমেদের পুত্র। তিনি সরকারি বিএল কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করে চাকরির জন্য অপেক্ষা না করে, পিতাকে অনুসরণ করে ২০০১ সালে পাইকগাছায় চিংড়ি পোনা ব্যবসায় হাত দেন। তাঁর কঠোর পরিশ্রমে এই ব্যবসায় তিনি সফলতা পেয়েছেন। ২০০৭ সালে ১৫০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে চিংড়ি চাষ শুরু করেন। তাঁর ধারাবাহিক সাফল্য দেখে তিনি আরও ব্যাপকভাবে চিংড়ি চাষে মনোযোগী হন এবং বর্তমানে পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলায় মোট ৬টি চিংড়ি ঘের রয়েছে, যার মোট আকার প্রায় ১৮৫০ বিঘা। তিনি আধুনিক উন্নত পদ্ধতি অনুসরণ করে চিংড়ি চাষ করে থাকেন, যা দেশের সামুদ্রিক ও অবিচ্ছিন্ন জলাশয় ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এই চাষের ফলে তিনি প্রতি বছর প্রায় ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা আয় করেন। তাঁর ঘেরগুলোতে কাজ করে থাকে ৪ থেকে ৫শ’ শ্রমিক, যা ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। তাঁর সফলতা অনুরূপ অন্য ঘের মালিকরাও উন্নত মানের পদ্ধতি গ্রহণে উৎসাহিত হচ্ছেন। দেশের মানুষের নিরাপদ প্রোটিনের চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান, রপ্তানি বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের অবদান গভীর। বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ জলাশয় রয়েছে প্রায় ৩৮.৬ লক্ষ হেক্টর, এবং সামুদ্রিক জলসীমা ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার, যা দেশের মাছের অন্যতম প্রধান সম্পদ। সরকার এই সম্পদ রক্ষা, উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা ও টেকসই ব্যবহারের জন্য সময়োপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করছে। ফলে বাংলাদেশ এখন মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ। গোলাম কিবরিয়া রিপন ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন, যেমন ২০১৩, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ সালে উপজেলা পর্যায়ে এবং ২০২৩ সালে জেলা পর্যায়ে। তিনি বলেন, “যেকোনো পুরস্কার মানুষকে উৎসাহিত করে কর্মে অনুপ্রাণিত করতে। জাতীয় মৎস্য স্বর্ণ পদক পেয়ে আমি অত্যন্ত গর্বিত ও সৌভাগ্যবান। এই সুন্দর অর্জনের জন্য আমি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, মৎস্য অধিদপ্তর এবং সকল শুভাকাক্সক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।