খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের বিভিন্ন বর্ষের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারী মোট ৪৭৫ জন শিক্ষার্থীকে সম্প্রতি মেধাবৃত্তির মাধ্যমে স্বীকৃতি জানানো হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন-ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব, অন্যদিকে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম। শিক্ষার্থীদের হাতে বৃত্তির চেক, সনদপত্র এবং শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন অতিথিরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব বলেন, শিক্ষার্থীদের একাডেমিক উৎকর্ষের জন্য মেধাবৃত্তি ও তার স্বীকৃতি—সনদপত্র প্রদান—একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী উদ্যোগ। এটি শুধু তাদের মেধার স্বীকৃতি নয়, বরং পরিশ্রম, সততা ও আত্মনিবেদনেরও পরিচয়। তিনি এও উল্লেখ করেন যে, মেধাবী শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের পাশাপাশি, তাদের পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদেরও উৎসাহিত করতে হবে যাতে তারা ভবিষ্যতে সফলতা অর্জন করতে পারে।
অতিরিক্তভাবে তিনি 강조 করেন যে, শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক চর্চায় মনোযোগ দেওয়াই যথেষ্ট নয়, বরং কমিউনিকেশন দক্ষতা, কম্পিউটার জ্ঞান ও সফট স্কিলেও পারদর্শী হতে হবে। সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার বিকাশের ওপর গুরুত্ব দিয়ে স্কুল ও কয়েকটি কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেকে আধুনিক ও প্রস্তুত করে তোলার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন ও মাদক থেকে দূরে থাকাও জরুরি। জীবনে হতাশা এলে তা কাটিয়ে ওঠার জন্য নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়া এবং নিজের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য স্থির করে সে অনুযায়ী চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তৃতায় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্যের স্বীকৃতিই হলো এই সনদপত্র। এটি ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের সিভি সমৃদ্ধ ও গুণগত মান বজায় রাখতে সহায়ক। তিনি আরও বলেন, সিভিতে শুধু একাডেমিক তথ্য নয়, বিভিন্ন প্রজেক্ট, থিসিস, কর্মশালা, সেমিনার ও সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমের তথ্যও যোগ করতে হবে।
বৃত্তি নীতিমালার বিষয়ে আলোচনা করে তিনি উল্লেখ করেন, দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা একটি অপ্রত্যাশিত রীতি—যেসব শিক্ষার্থী এসএসসি ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বৃত্তি পেয়েছে, তারা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বৃত্তির জন্য যোগ্য নয়। এটা একটিভির অমূলক উল্লেখ করে, তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থী পূর্বের অর্জনের পাশাপাশি নতুন করে যোগ্যতা প্রমাণ করলে বৃত্তি পাওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। এ বিষয়ে সরকারের নীতিমালা সংশোধনের প্রয়োজন আছে।
বিশেষ অতিথির ভাষণে জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ গোলাম হোসেন ও ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ নাজমুস সাদাত উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য দেন বৃত্তি কমিটির সভাপতি ও কলা ও মানবিক বিভাগের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ শাহজাহান কবীর।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুভূতি ব্যক্ত করেন ইংরেজি বিভাগের এস এম রেদোয়ান, শিক্ষা বিভাগের নাবিলা ইসলাম এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের রাধিকা চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুমাইয়া আক্তার ও খান মোহাম্মদ মুশফিক আকিব। একই সঙ্গে বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের প্রধান, প্রভোস্ট, বিভাগীয় পরিচালক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন, এ উদ্যেশ্য মূলক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।