অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি’ এই প্রতিপাদ্যকে ধারন করে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে সোমবার সকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ হুসাইন শওকত। তার ভাষণে তিনি বলেন, মাছ আমাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে মৎস্যজীবী ও মৎস্যচাষীদের আয় বেড়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে অনেক পোড়া ও পতিত জমি এখন মাছ চাষের উপযোগী হয়ে উঠেছে, এগুলিকে ব্যবহার করে মাছের উৎপাদন আরো বাড়ানো সম্ভব। এতে দেশের মাছের চাহিদা পূরণ হবে এবং খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, মৎস্যখাত দেশের অর্থনীতিতে অবদান রেখে চলছে এবং মানুষের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। পরিকল্পিতভাবে মাছ চাষ করলে কম জায়গায় বেশি উৎপাদন সম্ভব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগের পরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ বদরুজ্জামান। এ ছাড়া বক্তৃতা করেন খুলনা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, চিংড়ি চাষি মোঃ আবু হাসান সরদারসহ অন্যান্যরা। অনুষ্ঠানে সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, মৎস্যচাষি, মৎস্যজীবী, মাছ রপ্তানি প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। খুলনা জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর যৌথভাবে এই আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে জেলার ছয়জন সফল মৎস্যচাষি, উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানেকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এর আগে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শহিদ হাদিস পার্কের পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন এবং মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন। শোভাযাত্রাটি শহিদ হাদিস পার্ক থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এতে বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এই উৎসবের মাধ্যমে মৎস্যক্ষেত্রে উৎসাহ ও উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়েছে, যা দেশের মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির পথে এক গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে।