ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলমান রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। প্রতিদিনই মৃত্যুর খবর শোনা যায়, যার মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। এই ব্যাপক মানবিক সংকটের প্রতি বিশ্ববাসীর পাশাপাশি ক্রীড়াজগতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে উয়েফার উদ্যোগ।
ইতালির উদিনেতে অনুষ্ঠিত ব্লুনার্জি স্টেডিয়ামে গতকাল রóbবার টটেনহাম হটস্পার ও প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) এর মধ্যবর্তী ফাইনাল ম্যাচের আগে, মাঠে ‘শিশু ও বেসামরিক মানুষ হত্যা বন্ধ করো’ শিরোনামে ব্যানার প্রদর্শন করে উয়েফা। এই ব্যানারটি দুটি দলের ফুটবলাররা সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে থাকা সময় উপস্থাপন করা হয়, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বার্তার প্রতিফলন।
সেই দিনই নয়, ফাইনালের শুরুতেই সেই প্রতিবাদ আরও দৃঢ়ভাবে প্রকাশ পায়। ম্যাচে অংশ নেওয়া দুটি দলের ফুটবলাররা ক্রীড়াক্ষেত্রে জীবনের ঝুঁকি ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতীক হিসেবে, গাজা উপত্যকার দুটি শিশুকে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে অংশ নেন। উয়েফার পক্ষ থেকে সেই দুই শিশু গাজা থেকে তাদের সঙ্গে যোগ দেন। তাদেরকে নিয়মিত উয়েফা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আধিকারিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়, যা ন্যায্যতা ও মানবতার প্রতীক।
উয়েফার এই উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে বোঝানো হয়েছে, সৌভাগ্য ও মানবিক মূল্যবোধের জন্য αυτήও গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন মানবতা ঝুঁকির মুখে। ম্যাচের সময় বা কোনও সময়ে স্টেডিয়ামে রাজনৈতিক বার্তা বা নমনীয়তা প্রদর্শনের ব্যাপারে উয়েফার কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুপার কাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইরাক ও আফগানিস্তানের শরণার্থী শিশুকেও আনানো হয়েছিল। তবে, সেখানে নির্দিষ্ট কোনও দেশের যুদ্ধের উল্লেখ ছিল না।
এছাড়াও, ৭ আগস্ট ফিলিস্তিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএফএ) জানিয়েছিল যে, সুলেইমান নামে একটি শিশু, যিনি ‘ফিলিস্তিনের পেলে’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার একটি হামলায় নিহত হয়েছেন। তার মৃত্যুর খবর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে প্রবল প্রতিধ্বনি তুলে, মোহাম্মদ সালাহসহ বহু ফুটবল তারকা এই বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। সালাহ তার সোশ্যাল মিডিয়ায় সুলেইমানের ছবি পোস্ট করে লিখেছিলেন, “আপনাদের কি বলতে পারবেন সে কোথায়, কীভাবে এবং কেন মারা গিয়েছে?”
ফাইনাল ম্যাচটি ইতিহাসের পৃষ্ঠা উল্টে দেয়। এই ম্যাচে, পিএসজি প্রথমে ২-০ গোলে এগিয়ে থাকলেও, নাটকীয়ভাবে শেষ পর্যন্ত ২-২ ড্র হয়। পরে টাইব্রেকারে টোটেনহামকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো উয়েফা সুপার কাপ জিতে নেয় পিএসজি। এই ম্যাচের মধ্যে শিক্ষণীয় বার্তা ও মানবতার স্পর্শ ফুটে উঠেছে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মহলে, যা মানবিক সম্ভাব্যতা ও শান্তির ডাক দেয়।