চলতি আগস্ট মাসে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের ধারা আরও বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে যে, মাসের প্রথম ১৭ দিনেই ইতিবাচক প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দেশের বাইরে থেকে মোট ১৬১ কোটি ৯০ হাজার ডলার (প্রায় ১৯ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা, যেখানে প্রতি ডলার মূল্য ধরা হয়েছে ১২২ টাকা) পাঠানো হয়েছে। যদি এই ধারা বজায় থাকে, তাহলে আগস্ট মাসটি গত জুলাই মাসকে ছাড়িয়ে যেতে পারে, যেখানে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগস্ট মাসের প্রথম ১৭ দিনে এই রেমিট্যান্স এসেছে ১৬১ কোটি ৯০ হাজার ডলার। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো মাধ্যমে এসেছে ৪৯ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। বিশেষ করে, কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (কৃষি ব্যাংক) এর মাধ্যমে এসেছে ১৫ কোটি ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে ৯৬ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এছাড়া, বিদেশি ব্যাংকগুলো থেকে আসে ৩১ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
পূর্বের তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে রেকর্ড ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। তবে, আগস্ট মাসের এই সময়ে কিছু ব্যাংক থেকে কোনও রেমিট্যান্স আসেনি, যার মধ্যে উল্লেখ্য, রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। অন্যদিকে, বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে এসেছে কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামি ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক এবং বিদেশি ব্যাংকগুলো থেকে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
প্রসঙ্গত, গত অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৪-২৫ সালে আগস্ট মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। পুরো অর্থবছরে (২০২৪-২৫) প্রবাসী আয় মোট ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের বছর তুলনায় ২৬.৮ শতাংশ বৃদ্ধি। এর আগে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স ছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রবাহের বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাইয়ে এসেছে ১৯১.৩৭ কোটি ডলার, আগস্টে ২২২.১৩ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বর ২৪০.৪১ কোটি ডলার, অক্টোবর ২৩৯.৫০ কোটি ডলার, নভেম্বর ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার, মে ২৯৭ কোটি ডলার এবং জুনে ২৮২ কোটি ডলার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা ও প্রবাসীদের জন্য আয়ের পথ সহজ করার উদ্যোগের ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ ইতিবাচক ধারায় অগ্রসর হচ্ছে।