বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই ধারণা সত্যিই ভুল যে এক বছরেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে যে রাষ্ট্রের সংস্কারের জন্য কাজ করছি, সেখানে দীর্ঘদিনের অনাচার, অবিচার, নৈরাজ্য এবং দুর্নীতির বোঝা অনেক। একদিনে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়, এটাই বাস্তবতা। এক বছরের মধ্যে সবকিছু স্মুথলি স্বাভাবিক হয়ে যাবে—এমন ধারণার কোনো ভিত্তি নেই।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, গত ৫৩ বছরে আমাদের দেশে ক্ষমতা পরিবর্তনের উপায় বা বিধান গড়ে উঠতে পারেনি। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন সময়ের সূচনা হয়েছে, কিন্তু হঠাৎ করে সবকিছু সম্পূর্ণভাবে সংস্কার করা সম্ভব নয়। এটি চিন্তার বিষয় নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আজ, শনিবার (২৩ আগস্ট), জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘সামাজিক সুরক্ষা কতটা সুরক্ষিত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বিশেষ করে বলেন, রাজনীতি মানে বিচ্ছিন্নভাবে বা জোড়াসাঁতার দিয়ে কাজ করা নয়। এর জন্য দরকার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, দলের নেতাকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং আন্তরিকতা। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে দুর্নীতি ক্রমশ বেড়ে চলেছে, যা দেশের সংকটের মূল কারণ। সবকিছু নির্ভর করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ওপর, যারা ক্ষমতায় এসে কীভাবে দেশ বদলে ফেলবে, তা গুরুত্বপূর্ণ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০০৮ সালে বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে, কিন্তু বিভিন্ন বছর ধরে সরকার সেই ভোটের মূল্যায়ন করতে পারেনি এবং দেশকে দুর্বিসহ করে তুলেছে। তিনি আবারও বলেন, সবকিছু এক বছরের মধ্যে স্বাভাবিক করার স্বপ্ন বা ধারণা বাস্তব নয়।
তিনি যোগ করেন, আমাদের সবকিছু নির্ধারণ করে আসছে সরকারি আমলারা। তার মতে, একজন স্কুল শিক্ষকের সমস্যার সমাধান করতে তাকে ঢাকায় যেতে হয়, যার কোনো প্রয়োজন নেই। এ ধরনের সিস্টেমে দুর্নীতি আর বৈষম্য চলতেই থাকবে। সেই জন্য, একজন সাধারণ মানুষ রাতারাতি কিছু বদল করতে পারবেন না—এটাই বাস্তবতা।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আমরা বিপ্লবের কথা ভাবতে পারছি না। বরং আমাদের উচিত কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে যাওয়া, যেখানে আমাদের জনপ্রতিনিধিরা ন্যুনতম ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। তিনি বিশ্বাস করেন, এভাবেই দেশের জন্য সত্যিকার পরিবর্তন সম্ভব।