গত আগস্ট মাসের প্রথম ২৩ দিনে প্রবাসীরা বাংলাদেশে মোট ১৭৪ কোটি ৮৬ লাখ ডলার বা প্রায় পৌনে দুই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর ফলে স্থানীয় মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৩২ কোটি ৯২ লাখ টাকা, যেখানে প্রতি ডলার এর মান নেওয়া হয়েছে ১২২ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে জানা গেছে, আগস্টের প্রথম ২৩ দিনে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে মোট ১৭৪ কোটি ৮৬ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো থেকে এসেছে ৩৯ কোটি ২৯ লাখ ডলার। বিশেষভাবে চালু দুটি ব্যাংকের মধ্যে একটি (কৃষি ব্যাংক) থেকে পাঠানো হয়েছে ২৪ কোটি ৯৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার।
বেসরকারি ব্যাংকগুলো এই সময়ে পাঠিয়েছে ১০৯ কোটি ৭১ লাখ ৬০ হাজার ডলার, আর বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৮৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই সময়ের মধ্যে নয়টি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইসিডি), পদ্মা ব্যাংক, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। ওই মাসে অবশ্য কোনো ব্যাংক থেকে রেমিট্যান্স আসেনি।
অতীতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, যা এক বছরে সর্বোচ্চ রেকর্ড। পুরো অর্থবছর (২০২৪-২৫) জুড়ে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের মোট পরিমাণ ছিল ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬.৮ শতাংশ বেশি।
অর্থাৎ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। এর মাসভিত্তিক প্রবাহ ছিল নিম্নরূপ: জুলাই – ১৯১.৩৭ কোটি ডলার, আগস্ট – ২২২.১৩ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বর – ২৪০.৪১ কোটি ডলার, অক্টোবর – ২৩৯.৫০ কোটি ডলার, নভেম্বর – ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বর – ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারি – ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারি – ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চ – ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিল – ২৭৫ কোটি ডলার, মে – ২৯৭ কোটি ডলার এবং জুন – ২৮২ কোটি ডলার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ ও প্রবাসীদের আয়ের উত্তরণের জন্য নিবন্ধনের সুবিধা দেয়ার ফলে রেমিট্যান্সের প্রবাহ ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।