কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত হতে থাকা টানেল প্রকল্পে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি এবং দেশের প্রায় ৫৮৫ কোটি টাকা ক্ষতি করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি মামলার রেকর্ড করেছে। এই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে উপস্থিত থাকছেন সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এছাড়া মামলায় আরও তিনজন যুক্ত রয়েছেন, তারা হলেন- সেতু বিভাগের সাবেক সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী কবির আহমদ এবং সাবেক যুগ্ম-সচিব আলীম উদ্দিন আহমেদ।
দুদকের সহকারী পরিচালক মোঃ সিরাজুল হকের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার ঢাকাস্থ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এই মামলা দায়ের হয়। মামলার অভিযোগ অনুসারে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে, প্রকল্পের নেগোসিয়েশন কমিটির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এবং অনুমোদনবিহীন বিদেশি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও সুপারিশ না নিয়েই গুরুত্বপূর্ণ কাজসমূহ অন্তর্ভুক্তি করেন। এর ফলে সরকারের প্রায় ৫৯.৮০ মিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ আনুমানিক ৫৮৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা ক্ষতিসাধন হয়।
অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, তারা অবৈধভাবে পিপিএ ২০০৬ এর বিধান লঙ্ঘন করে ৫৫ লাখ ২১ হাজার ১৮৬ টাকার বিনিময়ে পরামর্শক নিয়োগ করেন, যা সরকারি অর্থের ক্ষতি। অভিযোগে আরও বলা হয়, নেগোসিয়েশন কমিটির পরামর্শের বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত তিনটি অপ্রয়োজনীয় কাজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা প্রকল্পের প্রকৃত মূল্যের থেকে অনেক বেশি দামে বিক্রি হয়। এই অতিরিক্ত কাজগুলোতে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে দেশের সাধারণ জনগণের প্রায় ৫৮৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়ে যায়।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০বি/৪০৯/১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) অনুচ্ছেদসহ বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলায় মূল অভিযোগটি হলো, প্রকল্পের মূল মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, কিন্তু ভুল পথে অতিরিক্ত খাতে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে প্রকল্পের মোট খরচ অপ্রয়োজনীয়ভাবে বেড়ে যায় এবং দেশের অর্থনীতি ও সাধারণ জনগণের স্বার্থের ক্ষতি হয়।
















