ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার রাজ্যে কংগ্রেস কার্যালয়ে সম্প্রতি হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, এই হামলার জন্য দায়ী মূলত বিজেপি কর্মী ও সমর্থকেরা। ঘটনাপ্রবাহের সূত্রপাত হয় যখন প্রধানমন্ত্র নরেন্দ্র মোদি ও তার প্রয়াত মাকে নিয়ে অশালীন মন্তব্যের কারণে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে রাজধানী ও বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করে। এক ভিডিওতে দেখা গেছে, দুই দলের যোগ্য কর্মীরা দলের পতাকার ডান্ডা হাতে একে অপরকে মারধর করছে, যা পরিস্থিতিকে আরও অবনতি করে তোলে। এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার না হলেও, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং তদন্ত চালানো হচ্ছে। কংগ্রেস ঘটনাটির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদে, দরভাঙ্গায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, এবং পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। একই সময়ে, পাটনায় বিজেপি রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায়, সেখানে কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন করা হলেও, পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক।
বিহার রাজ্যের পরিস্থিতিও গুরুতর। বিহারের পাটনায় বিজেপি নেতারা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করে, যেখানে কংগ্রেসের কর্মীরা পাল্টা আন্দোলনে অংশ নেয়। পাটনায় সংঘর্ষে অনেকের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
কলকাতা শহরেও পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। পশ্চিমবঙ্গের বিধান ভবনের বাইরে বিক্ষোভ সমাবেশে বিজেপি সমর্থকররা কংগ্রেস দপ্তরে ভাঙচুর চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে। রাকেশ সিংয়ের নেতৃত্বে এই হামলার ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সংক্রান্ত মামলা দায়ের হয়েছে।
অভিযোগের সুরে প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, ‘রাজনীতি দেউলিয়া না হলে এই ধরনের কাজ কেউ করে না। মোদি-প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চুরির অপবাদ দেওয়ার জেরেই এই হামলা হয়েছে, এবং এটি সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে বলে ধারণা করছেন আমরা। দোষীদের দৃষ্টিতে আনা ও সাজা দেওয়ার জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
বিহার কংগ্রেসের নেতা অশুতোষ জানান, প্রত্যক্ষতভাবে এই ঘটনার পেছনে সরকারের মদদ রয়েছে এবং তিনি নীতীশ কুমারের নীতির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জবাব দেব।’ অন্যদিকে, বিজেপি নেতা নীতিন নবীন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘মায়ের অপমানের বদলার জন্য বাংলার প্রতিটি ছেলে কংগ্রেসকে দেবে। আমরা অবশ্যই এর জবাব দেব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের রাজনীতি এত নিচে নেমে গেছে যে, তারা দেশের উন্নয়নের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী ও তার প্রয়াত মায়ের বিরুদ্ধে এই ভাষা লজ্জার ও গণতন্ত্রের জন্য কলঙ্কজনক।’
বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডাও বলেন, ‘এ ধরনের অশালীন আক্রমণ সীমা অতিক্রম করেছে। রাহুল গান্ধী ও তেজস্বী যাদবের ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ও তার প্রয়াত মায়ের সম্মাননির্বাচন অশোভন ও অবমাননাকর। আমি এর নিন্দা জানাই।’