নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে মিয়ানমারের নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের সমুদ্রে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভারতের বিরুদ্ধে। এই প্রতিবেদনে জানা গেছে, কমপক্ষে ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন, যেখানে তারা বলেছেন, দিল্লি থেকে তাদের আটক করে নৌবাহিনীর জাহাজে করে সাগরের মাঝে ছেড়ে দেওয়া হয়। এইসব নিপীড়িতরা এখন আবারও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি, কারণ তারা জানে না আবার কবে তারা স্বজনদের সাথে মিলিত হতে পারবে বা কোন পরিস্থিতির মুখে পড়বে। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, ভারতের এই অবহেলা রোহিঙ্গাদের জীবনকে চরম ঝুঁকিতে ফেলেছে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই ঘটনাগুলোর বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেছে।
নুরুল আমিন নামে একজন রোহিঙ্গা বলছেন, গত ৯ মে তিনি বর্তমানের ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন, যেখানে তিনি জানতে পেরেছেন তার পরিবারের চারজনসহ তাকে ভারতের সরকার ফেরত পাঠিয়েছে। তারা বহু বছর ধরে প্রাণভয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছিলেন, যেখানে বর্তমানে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ চলছে। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে জাতিগত গোষ্ঠী ও প্রতিরোধ বাহিনী জোরালো লড়াই চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ এক অজানা অপূর্ণতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।
দিল্লিতে বসবাসরত ২৪ বছর বয়সী আমিন মনে করেন, “আমার বাবা-মা ও স্বজনেরা কী দুঃখ-কষ্টে আছেন, তা আমি কল্পনাও করতে পারি না।” বিবিসির অনুসন্ধানে জানা গেছে, তাদেরকে দিল্লি থেকে বিমানে করে বঙ্গোপসাগরের এক দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে নিয়ে শেষে আন্দামান সাগরে ছেড়ে দেওয়া হয়, যদিও লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয়েছিল। পরে তারা সাঁতরে তীরের কাছে ফিরে আসে। এখন তারা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি, কারণ এরই মধ্যে তারা অত্যাচার, নিপীড়ন ও নিরাপত্তাহীনতার শিকার।
জন নামে একজন রোহিঙ্গা জানান, “আমাদের হাত পেঁচানো, চোখ ও মুখ ঢেকে জাহাজে তুলে নেওয়া হয়, তারপর সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়।” তিনি ও তার সাম্প্রতিক ভুক্তভোগীর স্বজনরা অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নুরুল আমিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “মানুষকে কোনওভাবেই এভাবে সমুদ্রে ফেলে দেয়া যায়? মানবতা কোথায়?