ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলের হামলায় এক দিনে আরও ৬৯ জন ফিলিস্তিনি মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, অনাহারে মারা গেছেন আরও তিনজন। এই অস্থির পরিস্থিতিতে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় অন্তত ৬৪ হাজার ৩০০ জন ফিলিস্তিনি জীবন হারিয়েছেন।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর প্রতিবেদন সংস্থা আনাদোলুর।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে নিকৃষ্ট রূপে পড়ে ৬৯টি লাশ আনা হয়েছে, পাশাপাশি আহত হয়েছে ৪২২ জন। এর ফলে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,৬২,০০৫ জনে।
ইসরাইলি বর্বরতা এতটাই ভয়ংকর যে, অনেক মৃতদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে কিংবা রাস্তায় পড়ে রয়েছে, যেখানে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছে না।
এছাড়া, গত এক দিনে মানবিক সাহায্য সংগ্রহের চেষ্টা চলাকালে গুলিতে আরো ছয়জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ১৯০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে, ২৭ মে থেকে এই পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২,৩৬২ জনে ও আহতের সংখ্যা ১৭,৪৩৪ জনের বেশি।
অতিরিক্ত, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে ও অপুষ্টিতে আরও তিনজন মারা গেছেন। এতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৭৬ জনে পৌঁছেছে, যার মধ্যে রয়েছে ১৩৪ শিশু।
এদিকে, ২০২৩ সালের মার্চের প্রথম সপ্তাহে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ গাজার সব সীমান্ত বন্ধ করে দেয়, ফলে ২৪ লাখের বেশি মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। এই অঞ্চলে তীব্র দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে, যা জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা মূল্যায়ন নিশ্চিত করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ মাসের শেষে এটি পুরোপুরি উত্তর গাজায় ছড়িয়ে পড়বে।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে কাতার, মিশর ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরাইল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও, ১৮ মার্চ থেকে ইসরাইলি সেনারা নতুন করে গাজায় হামলা চালাচ্ছে। তখন থেকে গাজায় কমপক্ষে ১১ হাজার ৭৬৮ জন নিহত ও ৪৯ হাজার ৯৬৪ জন আহত হয়েছেন।
বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এছাড়াও, গাজায় চলমান এই সংঘর্ষের জন্য ইসরাইল গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) মোকাবিলা করছে।