এএফসি অনূ বয়স ২৩ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশের যেন জ্বলে উঠলো শেষ মুহূর্তে। টানা দুটো ম্যাচে হেরেও মূল পর্বের জন্য সম্ভাবনা শেষ হয়ে গিয়েছিল, তাই এই ম্যাচটি ছিল একপ্রকার নিয়ম-রক্ষা করার। ভিয়েতনামের সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে খেলাটা ছিল মর্যাদাপূর্ণ ঘোষণা দেওয়ার সুযোগ। সেই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশ ৪-১ গোলে জয়ের স্বাদ নেয়।
প্রথমার্ধে ম্যাচের চিত্র ছিল অনেকটা ভিন্ন। সিঙ্গাপুর প্রথম ৪৫ মিনিটে দুর্দান্ত খেলেছিল এবং বেশ কিছু গোলের সুযোগ মিস করে। বাংলাদেশের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ বেশ কিছু অসাধারণ সেভ করেন, যা বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরতে সহায়তা করে। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে ঝড় তোলে বাংলাদেশের তরুণরা। ৭০-৮২ মিনিটের মধ্যে ১০ মিনিটে বাংলাদেশ চারটি গোল করে।
এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম গোলটি করেন ইতালির প্রবাসী ফাহমিদুল। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে জোরালো একটি শট নেন তিনি, যা সিঙ্গাপুরের গোলরক্ষক এই বলে প্রত্যাখ্যান করতে পারেননি। এটি ছিল ফাহমিদুলের বাংলাদেশের জার্সিতে প্রথম গোল।
তার দুই মিনিটের মধ্যে আল আমিনের উদ্দেশ্যে একটি লং বল পাঠানো হয়। দুর্দান্ত দক্ষতায় সেটি রিসিভ করে দারুণ ফিনিশিং করেন আল আমিন, যার ফলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। এরপর আট মিনিটের মধ্যেই মহসিন আহমেদ লং বল থেকে একাকী শটে গোল করেন। এই গোলে দলকে আরও এগিয়ে দেন মহসিন। শেষে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশের অধিনায়ক শেখ মোরসালিন। ৮২ মিনিটে তিনি বক্সের উপর দারুণ এক শটে দলকে বড় জয় উপহার দেন। ইনজুরির সময় সিঙ্গাপুর এক গোল করে সম্মান ফিরে দেয়।
বিশেষ উল্লেখ্য, ম্যাচের শেষ দিকে ইংল্যান্ডে থাকা কিউবা মিচেলকেও মাঠে নামান কোচ। এতে করে দলের গতি আরও বাড়ে এবং ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়।
প্রথম দুই ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করতে পারেনি বাংলাদেশ, অথচ আজকের এই জয় অনেক দিন পরে ফিরে এল আনন্দের হাসি। বাফুফের প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশ এবার তাদের পারফরম্যান্স দেখিয়ে এএফসি মূলপর্বে উঠবে। এর জন্য প্রথমবারের মতো বাহরাইনে ২৩ দলের এই আসর আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশ ২টি ম্যাচ খেলেছিল। এত সব প্রস্তুতি সত্ত্বেও প্রথম দুই ম্যাচে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স না করলেও, আজকের জয় দেশের ফুটবল প্রেমীদের জন্য অনেকটাই প্রেরণা জোগাবে।
মাস চারেক আগে ঢাকায় এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে বাংলাদেশ সিনিয়র দল ২-১ গোলে সিঙ্গাপুরের কাছে হেরেছিল। আজকের যুবদলের এই জয় যেন সেই হারভোলানো ব্যর্থতার পাহাড় কাটিয়ে নতুন আশার আলো দেখালো। এই জয়ে আগামী মাসে অক্টোবরের হংকং ম্যাচের জন্য অনেকটাই অনুপ্রেরণা পাবে বাংলাদেশ। ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবলেও এই জয় দেখিয়ে দিল দেশীয় ফুটবল আজও প্রতিযোগিতার লড়াইয়ে টিকে আছে।