মোংলা-রামপালসহ বাগেরহাট জেলার সংসদীয় আসনের পুনঃনির্বাচনের দাবিতে গত ৪৮ ঘণ্টার ব্যাপক হরতাল ও অবরোধের কারণে মোংলা সমুদ্র বন্দরে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক স্থবিরতা। জেলার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি আসন অন্যত্র স্থানান্তরের প্রস্তাবের প্রতিবাদে বাগেরহাটের সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতৃবৃন্দ হরতাল ও চলমান অবরোধের ঘোষণা দেন।
সংগঠনের সূত্র জানায়, এই ৪৮ ঘণ্টার হরতালে মোংলা বন্দর, ইপিজেড, ইকোনমিক জোনসহ মোট প্রায় ৫৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। বন্দরের বহিঃনোঙর, হারবাড়িয়া, ভ্যাসক্রিকি ও জেটি এলাকায় বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে পণ্য খালাস ও বোঝাই চললেও নৌচলাচল বন্ধ থাকায় বিভিন্ন জাহাজ নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে পারেনি। এর ফলে দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে পণ্য পাঠানোর জন্য শত শত লাইটার, কার্গো ও বোট নদীতে আটকা পড়ে রয়েছে।
অবরোধের কারণে নদী পারাপার ও নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া মোংলা-খুলনা মহাসড়কেও অবরোধ চালানো হয়েছে। যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের দুর্দশা বেড়েছে। স্কুলে যায়নি শিক্ষার্থীরাও এবং নিম্ন আয়ের মানুষগুলো চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। পণ্যবাহী ট্রাক ও লড়ি দিনভর অপেক্ষা করছে পণ্য খালাসের জন্য, কিন্তু যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছপালা ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা। মোংলা-খুলনা মহাসড়কের বাসস্ট্যান্ড, দ্বিগরাজ, মোংলা কলেজ মোড়, হাসপাতাল ঘাট, শেরাবুনিয়া, কানাইন্নগর, কুমারখালী ও নদী পারাপার ঘাটসহ প্রায় ১৮টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নেয় নেতাকর্মীরা। নদীতেও নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় গার্মেন্টস কর্মী ও শিক্ষার্থীরা কর্মস্থল ও স্কুলে যেতে পারেননি।
অবরোধের কারণে গামেন্টস, সরকারি ও বেসরকারি অফিস, শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ সব কার্যক্রম বন্ধ থাকা অবস্থা। ব্যবসায়ীরা দোকানে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভে নেমেছেন।
বাগেরহাটের সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামিম বলেন, “৩০ জুলাই মোংলা-রামপালসহ বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন অপসারণের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছি। এই সিদ্ধান্তের ফলে স্থানীয় মানুষ ক্ষুব্ধ। নির্বাচন কমিশনের এই ষড়যন্ত্রের কারণে মোংলা বন্দরে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি আরও কঠোর হয়ে উঠবে, এ বিষয়ে তারা প্রস্তুত। পাশাপাশি এই আন্দোলন অব্যাহত থাকলে এবং যদি কোনও অশান্তি সৃষ্টি হয়, তবে তার দায়ভার সম্পূর্ণরূপে নির্বাচন কমিশনের ওপর থাকবে।”