ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলমান ফিলিস্তিনের সহিংসতা ও গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে শিল্পীরা কঠোর ভূমিকা গ্রহণ করেছেন। ‘ফিল্ম ওয়ার্কার্স ফর প্যালেস্টাইন’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে, একশো বিশটির বেশি অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলী ইসরায়েলি কোনো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বা সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কাজ করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার প্রকাশিত এই যৌথ বিবৃতিতে তারা জানিয়েছেন, এখন থেকে ইসরায়েলে নির্মিত বা প্রযোজিত কোনও চলচ্চিত্রে তাদের অংশ নেওয়া হবে না। পাশাপাশি, দেশายোজিত কোনও চলচ্চিত্র উৎসবে তারা অংশ নেবেন না।
এই তালিকায় রয়েছেন অস্কার, বাফটা, এমি, পাম দ’অরসহ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অনেক পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব। পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন ইয়র্গোস ল্যান্থিমোস, আভা ডুভার্নে, অ্যাডাম ম্যাককে, বুটস রিলে, এমা সেলিগম্যান ও যশুয়া ওপেনহাইমার।
অভিনেতাদের মধ্যে রয়েছেন এমা স্টোন, অলিভিয়া কোলম্যান, আয়ো এডিবেরি, লিলি গ্ল্যাডস্টোন, মার্ক রাফেলো, রিজ আহমেদ, সিনথিয়া নিক্সন, টিল্ডা সুইনটন, জেভিয়ের বার্ডেম ও জো অ্যালউইন সহ আরও অনেকে।
বিবৃতিতে তারা অঙ্গীকার করেছেন, ইসরায়েলি প্রযোজনা বা পরিবেশকদের সঙ্গে এখন থেকে কোনো পেশাদার সম্পর্ক থাকবে না। তারা আরও বলছেন, ইসরায়েলি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ী গোষ্ঠী কখনোই ফিলিস্তিনীদের অধিকার সমর্থন করেনি। বরং অধিকাংশই নৃশংসতার পক্ষে নীরবে সহযোগিতা করে চলেছে, যা তারা রুখতে চান।
ফলে, জেরুজালেম ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, হাইফা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, ডোকাভিভ, তেলআবিব ইন্টারন্যাশনাল ডকুমেন্টারি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও টিএলভি ফেস্টের মতো বড় বড় উৎসবে তাদের দেখা আর হবে না।
এই সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করে, ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন অভিনেত্রী হান্না আইনবাইন্ডার বলেন, ‘দুই বছর ধরে গাজায় যা ঘটছে, তা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমার মনে গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। একজন ইহুদি আমেরিকান হিসেবে আমি মনে করি, এই গণহত্যা বন্ধ করার জন্য আমাদের সক্রিয়ভাবে ভূমিকা নিতে হবে। যখন রাজনীতিবিদরা ব্যর্থ, তখন শিল্পীদেরই এগিয়ে আসতে হবে।’
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যখন বিশ্বে সরকারগুলো এই সহিংসতাকে নীরব সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, তখন শিল্পীরা নিরপেক্ষ থাকতেও পারেন না। মানবাধিকার রক্ষা এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।