ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেন, নির্বাচনে নিজের ইশতেহারে যা ছিল, তা পূরণ করার জন্য তিনি সচেষ্ট থাকবেন। তাঁর পথচলা এখানেই শেষ হয়নি; নিজের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠে, ছাত্ররাজনীতির নতুন সূচনা তিনি করবেন নিজের হাতে। বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে তিনি এসব কথা জানান। গতকাল মঙ্গলবার ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের প্রার্থী সাদিক কায়েমের কাছে হেরে যায় আবিদুল ইসলাম। নির্বাচনের রাতে তিনি একটি ফেসবুক পোস্টে ফলাফলকে কারচুপি ও নির্বাচনকে প্রহসন বলে উল্লেখ করে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন।
উল্লেখ্য, ডাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে শিবিরের প্রার্থীরা জিতেছে ঐক্যবদ্ধ ছাত্রজোটের প্যানেলে। ভিপি পদে ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন শিবিরের প্রার্থী মোঃ আবু সাদিক কায়েম। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট।
বুধবার দুপুরের পরে আবিদুল ইসলাম এক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমার জীবনে এতদূর এসে আমি ভাবিনি। নির্বাচনের আগের রাতে খালেদ মুহিউদ্দিন ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করেন, ৫ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চান। আমি সদুত্তর দিতে পারিনি। আমি আসলে কখনোই জানতাম না, নিজেকে কোথায় দেখতে হবে বা কোথায় দেখা উচিত। একের পর এক আন্দোলন-সংগ্রাম এসেছে, নিজেকে রাজপথে সরাসরি নিয়েছি। সেই পথ আজ আমাকে এতদূর এনেছে। এটা ওরই কাজ। এই নির্বাচনে আমার দিন শুরু হয়েছে মিডিয়ার অপপ্রচার দিয়ে। দুপুর থেকে আমি বিভিন্ন জায়গায় ভোটে নানা সমস্যা খুঁজে পেয়েছি এবং সেগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আমি এখনও প্রত্যাশা করি, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও যথাযথ সিদ্ধান্ত আসবে।
আবিদ আরও লিখেছেন, ‘আমরা সবাই মানুষ, পরিপূর্ণ নয়। আমি জানি, আমি আপনাদের জন্য পুরোপুরি কাজ করতে পারিনি। সত্যি বলতে, জীবন আমার সেই সুযোগটুকুও দেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভাই-বোনের জন্য আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, যারা ভোট দিতে এসেছেন। মাত্র ২০ দিনের ক্যাম্পেইনে আমি চেষ্টা করেছি, সব ছাত্রের কাছাকাছি যেতে। অনেকটুকু পৌঁছেছি, কিন্তু সবাইকে স্পর্শ করতে পারিনি। তবে আমি আশ্বস্ত করতে চাই, আমার যাত্রা এখানেই শেষ নয়, এটি আরও দীর্ঘ।’
নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একজন ছাত্রনেতা হিসেবে তুলে ধরে আবিদ বলেন, ‘কথা দিচ্ছি, আমার নির্বাচনী ইশতেহারে যা কিছু ছিল, তা বাস্তবায়নে আমি প্রার্থনাসহ প্রয়োজনীয় সব কিছু করব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির নতুন সূচনাটা আমাদের হাতেই হবে। আমরা রাজপথের পাহারা দেব, নিজেদের সম্পূর্ণ দিয়ে বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির ইতিবাচক পরিবর্তন আনব। ইনশাআল্লাহ, আপনি পরবর্তী ডাকসুতে এর সফলতা দেখবেন। আবিদ কখনোই আপনাদের থেকে আলাদা হবে না।’
তিনি পোস্টটি শেষ করেন মহান মার্কিন মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের উক্তি দিয়ে—‘আমরা অচিরেই ক্ষণস্থায়ী নিরাশা গ্রহণ করতে পারি, তবে অপার আশাকে কখনো হারানো উচিত নয়।’