নেপালের রাজনৈতিক প্রবাহিত ঘটনায় বড় পরিবর্তন ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর, নতুন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান সুশীলা কার্কির সুপারিশে প্রেসিডেন্ট সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের প্রেস উপদেষ্টা কিরণ পোখরেল বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন, গত শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে সংসদ ভাঙার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন নির্বাচনের নির্ধারিত তারিখ হলো ৫ মার্চ, ২০২৬।
সুশীলা কার্কি, দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি হিসেবে, শপথ গ্রহণ করেন গত রাতে। এর আগে, তিনি ন্যায়বিচারের জন্য কঠোর সংগ্রাম করেছিলেন ও দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় গড়ে উঠেছেন। নতুন এই সরকার গঠিত হয়েছে একটি ছোট মন্ত্রিসভার মাধ্যমে, যার মেয়াদ থাকবে ছয় মাস। এই সময়ের মধ্যে তারা নতুন নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন।
শপথ নেওয়ার পরে, তিনি একজন ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লিখিয়েছেন, কারণ তিনি নেপালের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এর আগে, দেশটির পরিস্থিতি ছিল অস্থিতিশীল। সীমাহীন দুর্নীতি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদে চলমান আন্দোলন ও এর জেরে সৃষ্ট অস্থিরতা নানা রকম চ্যালেঞ্জের মুখে ছিল। গত সপ্তাহে এ আন্দোলন আরও জোরালো হলে একে কেন্দ্র করে এক তরুণ বিক্ষোভের দিকে আগাতে দেখা গেছে, যার মাঝে গুলি চালিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী নিহত হন। এর প্রতিবাদে, গত মঙ্গলবার কেপি শর্মা অলি প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেন ও গা ঢাকা দেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন হামলার ঘটনা ঘটে, যেখানে অনেক মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতা আক্রান্ত হন।
সুশীলার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিল ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল, যখন তিনি নেপালের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। তিনি দেশের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি হিসেবে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন। তার বিচারপতিকালীন সময়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন, যা গ্রামীণ জনগণের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়েছে।
পূর্বের একটি সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে, ভারত তাঁর জন্য অনেক সহায়তা করেছে। তিনি ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। এই পুরো ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে, নেপাল নতুন দিশা খুঁজে বের করার প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।