বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, যদি ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হয়, তাহলে এটি জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য বড় ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। তিনি আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টাও সময়মতো নির্বাচন আয়োজনের জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। বিএনপি তাদের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে স্পষ্ট মনোভাব প্রকাশ করেছে এবং নির্বাচনের পাশাপাশি ৭ জুলাইয়ের সনদ বাস্তবায়নে কোনো ধরনের অপ্রয়োজনীয় সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ তারা চান না।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘৭ জুলাইয়ের সনদ হবে এক গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক দলিল। এটি যেন প্রশ্নের বাইরে থাকে এবং ভবিষ্যতে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে না পড়ে, এই বিষয়েও গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রয়োজন হলে প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করে সনদ চূড়ান্ত করা হবে। আমরা চাই আলোচনার মাধ্যমে সব বিষয় নিষ্পত্তি হোক। আমরা জোর দিয়ে বলছি, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে। এর জন্য কোনো শর্ত দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি চলমান থাকবে সংস্কার ও বিচার কার্যক্রম। এগুলোর ওপর নির্ভরশীল নয়, বরং নির্বাচনের মাধ্যমেই আমাদের রাজনৈতিক অধিকার পূরণ হবে।
সালাহ উদ্দিন আরও জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নেতৃত্বে সব দলের সম্মতির ভিত্তিতে ৭ জুলাইয়ের সনদ তৈরি হয়েছে, তবে এটি এখনো চূড়ান্ত রূপ নেয়নি। কিছু সংশোধনী প্রয়োজন, যেগুলো তিনি মূলত জানাবেন। কিছু বিষয় প্রাথমিকভাবে আলোচনার বাইরে ছিল, সেগুলোও তিনি কমিশনের নজরে আনবেন এবং খসড়া সংশোধন করবেন। বিএনপি পক্ষ থেকে সনদে স্বাক্ষর করতে দুজনের নামও দেওয়া হয়েছে। তারা প্রস্তুত, সই করার জন্য।
তিনি বলেন, ‘সনদের সঙ্গে একটি অঙ্গীকারনামায়ও সইয়ের কথা রয়েছে, তবে সেটি কি সনদের অংশ হবে বা হবে না, এ বিষয়ে আমাদের কিছু ধারণা আছে। এই ব্যাপারে আমরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছি।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক দলের সম্মতিপ্রাপ্ত বিষয়গুলো সনদে অন্তর্ভুক্ত ও বাস্তবায়িত হবে। বিভিন্ন দলের প্রস্তাবনাগুলোর সঙ্গে তিনি আলোচনা করেছেন এবং সাংবিধানিক উপায়ে তা বাস্তবায়নের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে, তিনি জানান, কোনও অপ্রয়োজনীয় বা অদূরপ্রসারী সংবিধান সংশোধনে তারা সম্মত নয় এবং অপ্রয়োজনীয় আইনি পরিবর্তনগুলো এড়ানোই তার লক্ষ্য। আইনানুগ পরামর্শের জন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়েও তিনি নজর দিয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউলাহসহ অন্যান্য দলের নেতারা।