বাগেরহাটে চলমান শৃঙ্খলাহীন হরতালের কারণে সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ বেড়েই চলছে। তৃতীয় দফায় তিন দিনের হরতাল পালন করছে বিভিন্ন দলীয় নেতাকর্মীরা, যারা মূলত ৪টি সংসদীয় আসন বজায় রাখার দাবিতে এই আন্দোলন করছেন। আজ সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে তারা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মিছিল করেন। এছাড়া বিভিন্ন স্থানেও তারা অবস্থান নেন। বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল থেকে দুরপাল্লার ও অভ্যন্তরীন রুটে কোনও যানবাহন চলাচল করছে না, তবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রয়েছে। মোটরসাইকেল, ইজিবাইক ও রিকশাগুলো মহাসড়ক ও ছোট সড়কে চলাচল করছে।
জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম বলেন, জনগণের ভোগান্তির কথা ভেবে আমরা মহাসড়কে হরতাল ঘোষণা করেছি। তবে ইজিবাইক, রিকশা, মোটরসাইকেলসহ দুই চাকার যানবাহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এই হরতালের আওতামুক্ত থাকায় আজকের হরতালে জনগণের ভোগান্তি নেই।
অপরদিকে, সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা দাবি করেন যে, বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন পূর্বের মতো বহাল রাখতে হবে। তারা সরকারের কাছে ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, দাবি মানা না হলে আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম বলেন, চারটি আসনের দাবি বাগেরহাটবাসীর খুবই ন্যায্য। এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। পাশাপাশি, তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে উচ্চ আদালতে রিট দায়েরের ঘোষণা দেন, যাতে আদালত আমাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত দিয়ে আসনগুলি পুনরুদ্ধার করে দেয়।
হরতালের প্রথম দিন, সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এবং মঙ্গলবার ও বুধবার সকাল 6টা থেকে দুপুর 12টা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। এর আগে, তারা দুটি দফায় হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন।
গত ৩০ জুলাই, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রাথমিক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়, যা থেকে বাগেরহাটবাসী শুরু করে আন্দোলন। নির্বাচনী কমিশনের শুনানিতে অংশ নিয়ে তারা এই দাবিতে সোচ্চার হন। তবে, ৪ সেপ্টেম্বর, নির্বাচন কমিশন only সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসনই ঘোষণা করে, যা তাদের দাবি ও গণ মানুষের চাহিদাকে উপেক্ষা করে বলে অভিযোগ।
নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত গেজেটে বাগেরহাট-১ (বাগেরহাট সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নামের সংজোয়াগুলো অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এর আগে, এই চারটি আসনের জন্য ছিল বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)। দীর্ঘদিন ধরে এই চার আসনে নির্বাচন চলে আসছে। তবে, চূড়ান্ত গেজেটে আসনগুলো পরিবর্তিত হয়ে বর্তমানে তিনটি হয়ে গেছে। এটি বাগেরহাটবাসীর সঙ্গে প্রতারণা ও তাদের ন্যায্য দাবি পর ignore করার শামিল।