দক্ষিণ জেরুজালেমে চলমান ফিলিস্তিনের ওপর সেনাস্পন্দনের কারণে সহিংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে শিল্পীরা এবার অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নিলেন। ‘ফিল্ম ওয়ার্কার্স ফর প্যালেস্টাইন’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে, বাংলাদেশের মতো বিশাল সংখ্যক ১২ শতাধিক চলচ্চিত্র তারকা, নির্মাতা ও কলাকুশলী ইসরায়েলি কোনো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বা সাংস্কৃতিক উৎসবের সাথে নিজেদের সংশ্লিষ্টতা দ্রুত প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা জানান, এখন থেকে তারা ইসরায়েলি নির্মিত বা প্রযোজিত কোনো চলচ্চিত্রে অংশ নেবেন না। পাশাপাশি, ইসরায়েলি কোনো চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনাও বাতিল করেছেন তারা। এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন অস্কার, বাফটা, এমি, পাম দ’অরসহ নানা আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব। এছাড়া, বিশ্বের অন্যতম স্বনামধন্য পরিচালক ইয়র্গোস ল্যান্থিমোস, আভা ডুভার্নে, অ্যাডাম ম্যাককে, বুটস রিলে, এমা সেলিগম্যান, যশুয়া ওপেনহাইমার, মাইক লেইসহ তরুণ ও অভিজ্ঞ নির্মাতারা এ তালিকায় রয়েছেন।
অভিনেতাদের মধ্যে আছেন এমা স্টোন, অলিভিয়া কোলম্যান, আয়ো এডিবেরি, লিলি গ্ল্যাডস্টোন, মার্ক রাফেলো, রিজ আহমেদ, সিনথিয়া নিক্সন, টিল্ডা সুইনটন, জেভিয়ের বার্ডেম, জো অ্যালউইন, জশ ও’কনরসহ আরও অনেকে। তারা বলেন, ইসরায়েলি প্রযোজনা বা পরিবেশক সংস্থাগুলি কখনোওই ফিলিস্তিনের মানুষের অধিকার সমর্থন করেনি। বরং, অধিকাংশই নৃশংসতা চালাচ্ছে বা সহায়তা করছে। ফলে, তারা এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পেশাগত সম্পর্ক রাখবেন না।
এই সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ, জেরুজালেম ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, হাইফা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, ডোকাভিভ, তেলআবিব ইন্টারন্যাশনাল ডকুমেন্টারি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও টিএলভি ফেস্টের মতো বড় বড় আন্তর্জাতিক সংস্কৃতি উৎসবে তারা উপস্থিত থাকছেন না এবং তাদের কাজের প্রদর্শনও দেখা যাবে না।
বিবৃতির পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করে, ইহুদি সম্প্রদায়ের মার্কিন অভিনেত্রী হান্না আইনবাইন্ডার বলেন, ‘গাজায় গত দু’বছর ধরে চলমান সহিংসতা ও মানবিক বিপর্যয় হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে। একজন ইহুদি মার্কিন নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি, এই গণহত্যা বন্ধে আমাদের সক্রিয়ভাবে ভূমিকা নিতে হবে। যখন রাজনীতি ব্যর্থ হয়, তখন শিল্পীদেরই এগিয়ে আসা উচিত।’
সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, বিশ্বজুড়ে সরকারগুলো যখন এই নিরীহ মানুষের ওপর অন্ধ সমর্থন দিচ্ছে, তখন শিল্পীরা অবশ্যই নিরপেক্ষ থাকতে পারবেন না। মানুষের অধিকারের জন্য দাঁড়ানো এখন দারুণ জরুরি।