অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যাপারে স্পষ্টভাবে বলেছেন, আমাদের দরকার হচ্ছে ৩০ বিলিয়ন ডলার। তবে, এক থেকে দেড় বিলিয়ন ডলার অর্থ আনতে গিয়ে আমাদের অনেক সময় জটিলতায় পড়ে যেতে হয় এবং প্রচুর জানবের হয়ে যায়। তিনি এই মন্তব্য করেছেন আজ, সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর), রাজধানীর পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) যৌথ আয়োজনের তিন দিনব্যাপী ‘নেভিগেটিং ক্লাইমেট ফাইন্যান্স: মিডিয়া রিপোর্টিং’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায়।
তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন ধরণের দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হচ্ছে আমাদের। এর মধ্যে মানুষের তৈরি দুর্যোগের সংখ্যা খুব বেশি, আবার প্রকৃতি আঘাত হানার ঘটনাও কম নয়। এই সমস্যার সমাধানে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষের সমন্বয় প্রয়োজন—বিজ্ঞানী, নীতিনির্ধারক, প্রতিষ্ঠান, অর্থের উৎস ও জনগণ।
সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে নিজস্ব প্রচেষ্টায় দুর্যোগ মোকাবিলা করে তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। তিনি বলেন, আগে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসতেন; কিন্তু এখন স্থানীয় মানুষ আগে থেকে প্রস্তুত থাকেন। এই প্রক্রিয়াটাকে আরও জোরদার করতে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন।
অর্থ উপদেষ্টা মন্তব্য করেন, আমরা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ দেশ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মানুষের তৈরি দুর্যোগের ঘটনা ও ব্যপক। এসব মোকাবিলা এবং প্রস্তুতির জন্য বার্ষিক প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ধার্য করা হয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলার। তিনি জানান, সামনে তিনি আইএমএফের সঙ্গে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের দরাদরি করবেন।
সাংবাদিকদের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক তথ্য ও সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে সাংবাদিকদের আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। জাপানের শিক্ষার্থীদের মতো আমাদেরও ছোট বেলা থেকেই শিশুদের সচেতন করতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, যিনি উল্লেখ করেন, জলবায়ু তহবিল থেকে অর্থ সংগ্রহে গুরুত্ব দিতে হবে এবং এর জন্য আমাদের ক্ষতি বা দুর্যোগের গল্পগুলো প্রকাশ করতে হবে। সাংবাদিকদের এই কাজে সহায়তা চাই তিনি।
অন্য একজন বিশেষ অতিথি, প্রধান উপদেস্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, বলেখ, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশের বিভিন্ন শঙ্কাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে, যেমন সিলেটে পানি বৃদ্ধি ও ডেঙ্গু রোগের ঢেউ। এসব সমস্যা বৈশ্বিক ক্ষেত্রে গুরুত্ব পায়নি বলে তারা অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে বাধা পাচ্ছেন।
এই তিন দিনের প্রশিক্ষণে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে ৬০ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেছেন, যার মাধ্যমে তারা জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়গুলো আরও গভীরভাবে জানতে ও প্রচার করতে পারবেন।