দক্ষিণ এশিয়ার শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ এবং নেপালে তরুণ নেতৃত্বে ব্যাপক গণবিক্ষোভের কারণে সরকার পতনের ঘটনাগুলি বিশ্বে আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ভারতের জন্যও এই আন্দোলনগুলো উদ্বেগজনক, যেখানে নেতাদের ধারণা, এগুলি ভবিষ্যতে দেশের স্থিতিশীলতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ দেশটির ইতিহাসে ১৯৭৪ সালের পর থেকে সংগঠিত সকল ধরনের আন্দোলনের কারণ, কার্যকারণ ও গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণের জন্য একটি গবেষণা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো ‘স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর ব্যাপক আন্দোলন’ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এজন্য বিপিআরঅ্যান্ডডি, অর্থাৎ ভারতের পুলিশ গবেষণা ও উন্নয়ন ব্যুরোকে একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর’ (এসওপি) তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দীর্ঘকালীন আন্দোলনের কারণ, অর্থনৈতিক প্রভাব, ফলাফল এবং পেছনের সংঠিত গোষ্ঠীর কার্যকলাপ খতিয়ে দেখে ভবিষ্যতে পরিকল্পনা করা হবে।
অগাস্টে নয়াদিল্লিতে একটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি কনফারেন্সে এই নির্দেশনা দেন অমিত শাহ। সেখানে তিনি বলেন, স্মার্ট অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে আন্দোলনের প্রকৃতি বোঝার পাশাপাশি, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিকগুলো বিশ্লেষণ করে বড় ধরনের আন্দোলনের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিতে হবে। এই জন্য তিনি বিপিআরঅ্যান্ডডিকে সব আন্দোলনের নথিপত্র ও তদন্ত প্রতিবেদন গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করতে বলেছেন।
শাহ ভারতের পুলিশ, তদন্ত সংস্থা এবং আর্থিক জোট—যেমন এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি), এফআইইউ (অর্থনৈতিক তদন্ত সংস্থা) ও সিবিডিটি (সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস)-র সঙ্গে সমন্বয় করে এই গবেষণা পরিচালিত করবে। এর পাশাপাশি, সন্ত্রাসী অর্থায়ন রোধ, আন্তর্জাতিক জালিয়াতি বিরোধী ব্যবস্থা এবং ধর্মীয় সমাবেশের মাধ্যমে সংঘাতের ঝুঁকি কমানোর জন্যও এসওপি তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, অমিত শাহ রাজ্য পুলিশ ও বিভিন্ন সংস্থা—যেমন এনআইএ, বিএসএফ এবং এনসিবি—কে আলাদা কৌশল ও পরিকল্পনা তৈরি করে চলমান সংকট মোকাবিলার নির্দেশ দিয়েছেন। বিশেষ করে, পাঞ্জাব ও খালিস্তান সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে নজরদারি বাড়ানোর জন্য এই সংস্থাগুলোর কার্যক্রমে বৈচিত্র্য আনার পরিকল্পনা থাকছে। এর মধ্যে রয়েছে অপরাধ সংগঠনের নেটওয়ার্ক ভাঙা, অপরাধীদের স্থানান্তর ও নজরদারি বাড়ানো, যাতে দেশি-বিদেশি সকল চক্রান্ত দ্রুত নজরে আসে ও প্রতিহত করা যায়।