আলোচিত সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বাংলাদেশ থেকে দুবাই, তারপর যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারকারী এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন আরামিট গ্রুপের এজিএম উৎপল পাল এবং দেশের সম্পদ দেখাশোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল আজিজকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গ্রেপ্তার করেছে।
২৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন, বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর), তাদেরকে চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাদের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন জানানো হয়, যা আদালত গ্রহণ করেন।
জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়া মো. আবদুল আজিজ ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি দুদকের এজাহারভুক্ত আসামি ও আরামিট পিএলসির এজিএম উৎপল পালকে জড়িয়ে আছেন। দুদকের সূত্রে জানানো হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিদেশি সম্পদ অর্জন ও দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন উৎপল পাল। তিনি জাবেদের দেশ থেকে দুবাই ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারের গুরুত্বপূর্ণ খুঁটি। এমনকি, দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উৎপল পাল ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন, তার কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে দুটি ল্যাপটপ এবং দুটি মোবাইল। এসব ডিভাইস থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, যার ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, আব্দুল আজিজ সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত ছিলেন।
এদিকে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য.duদকের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে, যা এখন প্রক্রিয়াধীন। অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ১২৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এখন পর্যন্ত, দুদকের তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনুসন্ধান ও মামলা চলমান।
বাংলাদেশের আদালত সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রীর নামে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং অন্যান্য দেশে ৯টি সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছে। এছাড়া মার্চ মাসে ৩৯টি ব্যাংক হিসাবও ফ্রিজ করা হয়, যার মধ্যে মোট ৫ কোটি ২৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা জমা রয়েছে।
অপর দিকে, আদালত সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ১০২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ৯৫৭ বিঘা জমি জব্দের নির্দেশ দিয়েছে। ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবরের মধ্যে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়েছে।