বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি জন্য আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো দেশের প্রতিটি ভোটারের আস্থা আরও শক্তিশালী এবং নিশ্চিত করা। এটি আমাদের মূল লক্ষ্য, কারণ গণতন্ত্রের ভিত্তি হলো জনগণের বিশ্বাস ও সমর্থন।
আজকের ও ভবিষ্যতের তরুণ প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষা সম্পন্ন করে বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতেই বিএনপি কাজ করছে। এজন্য দলটি তৃণমূল থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের কাছে দারুণভাবে পৌঁছে দিচ্ছে সংগঠনের শক্তিমত্তা ও গণতান্ত্রিক মূলমন্ত্র। এই ধরনের সমন্বিত প্রচেষ্টা আমাদের লক্ষ্য—to স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং জনসমর্থন ধরে রাখা।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি এসব কথা লিখেছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে দলের সাত হাজারেরও বেশি সদস্যের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, এবং অসদাচরণের জন্য কেউ শাস্তি পেয়েছেন, আবার কেউ বহিষ্কৃত হয়েছেন। এই কঠোর পদক্ষেপের মাঝেও সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়নি, তবে বাস্তবতার দিক দিয়ে এগুলো অপরিহার্য ছিল। তিনি বলেন, শৃঙ্খলা কোনো দুর্বলতা নয়, বরং এটি আমাদের শক্তির উৎস। দলের সদস্যদের দায়বদ্ধ করে আমরা আবারো প্রমাণ করলাম বিএনপি সততার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তারেক রহমান আরও বলেন যে, ক্ষমতাসীনদের কৃত মানদণ্ডের মতোই আমাদেরও উচিত নিজেদের মানদণ্ড স্থাপন করা, যাতে জন আস্থা পুনরুদ্ধার হয়। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে—a যারা রাজনীতিকে শুধুমাত্র ক্ষমতার খেলা হিসেবে দেখে না, বরং একটি সমাজের জন্য গড়ে তোলা মহৎ সংগ্রামের অংশ হিসেবে দেখে।
রাজনীতির আধুনিক চাহিদা মেটাতে বিএনপি স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে নিজেকে আধুনিক করে চলছে—এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও লিখেছেন, জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ ও যোগাযোগ আরও জোরদার করছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, তরুণদের কর্মসংস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন, ডিজিটাল উদ্ভাবনসহ ৩১ দফা কর্মসূচি আমাদের নীতির মূল ভিত্তি। এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলকই নয়, বরং আরও বেশি নারী, তরুণ ও পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চাই, যাতে জাতির উন্নয়ন তরান্বিত হয়। আমাদের লক্ষ্য, বিএনপি যেন সেবার, ন্যায়বিচারের এবং দক্ষতার প্রতীক হয়ে উঠে—not বিভাজন বা সুবিধাভোগের প্রতীক।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো আলাদা, তাই আমাদের পদক্ষেপগুলোও হতে হবে নতুন ভাবনা, ভিত্তি করে। তবে আমাদের ইতিহাসকে অস্বীকার না করেই অগ্রসর হতে হবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে জনগণের আশার আলো দেখিয়েছিলেন, এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়া স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই প্রতিষ্ঠা সংগ্রামকে অটুট রেখে দেশ এখন নতুন যুগের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
নিজের ঐতিহ্যকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিএনপি এক শৃঙ্খলাবদ্ধ, ভবিষ্যতনির্ভর ও আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণের পথে কাজ করছে—এটাই তারেক রহমানের প্রত্যয়। তিনি বলেছেন, তরুণরা বাস্তব সুযোগ চায়, তারা ফাঁকা বুলি পছন্দ করে না। জনগণ চায় স্থিতিশীলতা, তারা বিশৃঙ্খলা চাই না। আর বিশ্ব চায় বাংলাদেশ হোক একটি বিশ্বাসযোগ্য ও সম্মানিত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এই প্রত্যাশাগুলো পূরণে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।
শেষে, সহকর্মী ও নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে তিনি আহবান জানিয়েছেন, সবাই একযোগে কাজ করতে, এক সঙ্গে শৃঙ্খলা ও ঐক্য বজায় রাখতে এবং জনগণের সেবা করতে। তিনি বিশ্বাস প্রকাশ করেছেন, আপনারা যেমন আমার ওপর আস্থা রাখেন, আমি তেমনি আপনাদের ওপর আস্থা রাখি। এই সাফল্যের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করবো, বাংলাদেশে একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান এবং মানুষের প্রত্যাশিত ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সক্ষম—ইনশাআল্লাহ।