পাকিস্তান ও সৌদি আরব দুটি দেশ সম্প্রতি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তি অনুযায়ী, যদি কোনো এক দেশের ওপর আঘাত হানা হয়, তাহলে সেটি উভয় দেশের জন্য আগ্রাসন হিসেবে গণনা করা হবে। এই বিবৃতি দুদেশের মধ্যে সুদীর্ঘকাল ধরে চলে আসা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারিত্বের নতুন চেহারা দেখিয়েছে। চুক্তির মূল লক্ষ্য হলো একে অপরের প্রতিরক্ষা শক্তি জোরদার করা এবং কোন ধরনের হামলার বিরুদ্ধে যৌথভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। খবরটি জানিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, এই পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে ভারতের সক্রিয় নজরদারি ও গভীর চিন্তাচরণ চলছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “আমরা দেখেছি যে সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে এই কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটি একটি দীর্ঘদিনের অপ্রকাশিত সমঝোতার আনুষ্ঠানিক রূপ। আমরা এই চুক্তির প্রভাব খতিয়ে দেখছি, সেটি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, তা বিশ্লেষণ করছি। আমাদের দায়িত্ব, যেন দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে ও সর্বস্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।” এর আগে, সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বাড়ি আল-ইয়ামামায় পাকিস্তান ও সৌদি আরবের যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এই চুক্তি ঐতিহাসিক সম্পর্কের ভিত্তিতে, যেখানে ইসলামী ভ্রাতৃত্ব ও দীর্ঘদিনের সম্পর্কের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার করার পাশাপাশি, একে অপরের বিরুদ্ধে যেকোনো আক্রমণের মোকাবিলায় যৌথ প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্য আছে। খবরটি প্রকাশের সময়ে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির উপস্থিত ছিলেন। বিশেষত, এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে যখন কাশ্মিরের পেহেলগামে হামলা এবং এর পরবর্তী ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। অন্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারত-সৌদি সম্পর্ক বেশ দৃঢ় হয়ে উঠছে। মোদির তিনবারের সৌদি সফর এবং ২০১৬ সালে তাঁকে দেওয়া ‘কিং আবদুল আজিজ স্যাশ’ সম্মাননা এই সম্পর্কের গভীরতা প্রমাণ করে। বর্তমানে, সৌদি আরব ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। এই সম্পর্কের উন্নতি ও গভীরতা উভয়ের মধ্যে গভীর সমঝোতা ও সহযোগিতা বাড়াচ্ছে।