তানজিদ হাসানের দুর্দান্ত হাফ সেঞ্চুরির জোরে প্রথম ১০ ওভারে বাংলাদেশ ৮৭ রান তুলেছিলো, তবে এরপর ব্যাটিংয়ে তারা ঠিকঠাক করার রাখতে পারেনি। এই কারণে ভালো শুরু পাবার পরও ১৫৪ রানে আউট হতে পারেনি বাংলাদশের ব্যাটসম্যানরা। লক্ষ্য অনুযায়ী দ্রুত রান সংগ্রহের চেষ্টায় আফগানরা নিয়মিত উইকেট হারাতে শুরু করে। নাসুম আহমেদ ও রিশাদের দুর্দান্ত স্পিনে তাদের ১৪৬ রানে আটকে দেয় বাংলাদেশ। এর ফলে, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৮ রানে জেতা বাংলাদেশ সুপার ফোরে খেলার স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয় লিটন-তাসকিন আহমেদের দল।
আফগানিস্তান শুরুতেই নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ে। ইনিংসের প্রথম বলেই সেদিকউল্লাহ অটলের উইকেট হারায় তারা। নাসুম আহমেদের লেংথ ডেলিভারিতে ব্যাকফুটে গিয়ে খেলার চেষ্টায় লেগ বিফোরে আউট হন বাঁহাতি ওপেনার সেদিকউল্লাহ। একই ওভারে সেখানে মেইডেন হয় এবং উইকেটও পান নাসুম। দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশ পেলো সুযোগ, ইব্রাহিম জাদরান কাট করতে গিয়ে কাটা পড়েন।
দ্বিতীয় ওভারে স্ট্রাইক পান রিশাদ, তিনি বেশ কিছু ভালো ডেলিভারি করেন এবং ইব্রাহিমকে ফিরিয়ে দেন। ইব্রাহিমের ১২ বলে ৫ রানের ইনিংস এভাবেই শেষ হয়। আফগানরা প্রথম পাওয়ার প্লে-তে ২৭ রানে এগোতে পারেনি। তবে গুরবাজ ও গুলবাদিন বড় শট খেলার জন্য উঠে আসে, যদিও রিশাদ তাদের প্রথম জোড়া আউট করেন গুলবাদিনকে লিডিং এজে ক্যাচ করে। এরপর গুরবাজের ক্যাচ ইভেন্টে মহামূল্যবান হয়ে ওঠে।
মোহাম্মদ নবি সঙ্গে কিছুটা ঝড় তুললেও শেষ পর্যন্ত রানের জগতে কিছুটা নীচে পড়ে। তাকে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজ। নবি ১৫ বলে ১৫ রানে আউট হন। এরপর আজমতউল্লাহ ওমরজাই স্বভাবতই ব্যাটে ঝড় তোলে। তিনি প্রথমে সাইফের চার ও দুই ছক্কা মারেন, পরে তাসকিনের ওভারে আবার ছক্কা মারেন। তবে ওমরজাইকে তাসকিন ফিরিয়ে দেন। করিম জানাতের রান আউটের পর রশিদ ও গাজানফারকেও ফেরান মুস্তাফিজ। আফগানদের রানের ঝুড়ি শেষ হয় ১৪৬।
অন্যদিকে, টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ শুরু থেকেই উজ্জীবিত হয়। পাওয়ার প্লেতে এক উইকেটও হারায়নি তারা। ওপেনার তানজিদ হাসান ও সাইফের দুর্দান্ত সূচনায় বাংলাদেশ দ্রুত শুরু করে। বিশেষ করে, তানজিদ মাত্র ২৮ বলে সাতটি ছোড়া উড়ান নিয়ে হাফ সেঞ্চুরি করেন যা বাংলাদেশের বড় সংগ্রহের পথ দেখায়। তবে অন্য ব্যাটাররা অনুকরণে সক্ষম হয় না, ফলে সংগ্রহ থামে ১৫৪ রানে।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দুরন্ত চাপের মধ্যে দুটি জোড়া উইকেট নেয় আফগান স্পিনার রশিদ ও নূর আহমেদ, তারা মাত্র ৮ ওভারে ৪৯ রান খরচ করে। এই স্পিনারদের বোলিংয়ের ফলে বাংলাদেশ উড়ন্ত সূচনা সংগ্রহ করলেও ফলাফল আশা অনুযায়ী হয়নি। সাইফ ২৮ বলে ৩০ রান করে বিদায় নেন, তবে অন্যপ্রান্তে তানজিদ ঝোড়ো ব্যাটিং চালিয়ে যান। তিনি ঢুকে পড়েন নিজের সপ্তম টি-টোয়েন্টি হাফ সেঞ্চুরিতে। ১০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ হয় ৮৭/১, যা দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যায়।
তবে মধ্যভাগে কিছুটা চাপের মুখে পড়ে। তাওহীদ হৃদয় ২০ বলে ২৬ রানসহ আউট হন, আর শামীম হোসেন ১১ বলে ১১ রান করেন। শেষের দিকে জাকের ব্যাটে চাপ বাড়িয়ে ১২ রানে ১৩ বলে ১২ রান করেন। নুরুল হাসান সোহান ৬ বলে ১২ রান করে দলের রান ১৫২ পার করেন। অবশেষে, বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ১৫৪ রান, যা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা সংগ্রহ।