বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আসছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো, সম্পূর্ণভাবে আলাদা করা হলো দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত। এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য হলো মামলার নিষ্পত্তির গতি বৃদ্ধি ও দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা মামলাজট কমানো। বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপন জারি করে এই নতুন ব্যবস্থা বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়।
বর্তমানে, জেলা আদালতের বিচারকরা যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ এবং জেলা জজ—এই তিন ধরনের পদে কাজ করেন। তাদের একাধিক দায়িত্বে থাকা ও একাধিক ধরনের মামলার বিচার করতে হওয়ার কারণে মামলাজট বাড়ছে, পাশাপাশি বিচারপ্রক্রিয়া দীর্ঘ হয়। দেখা যায়, দেশের সকল অধস্তন আদালতগুলোতে প্রায় ১৬ লাখ দেওয়ানি মামলা ও প্রায় ২৩ লাখ ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন, যেগুলোর মধ্যে ফৌজদারি মামলার সংখ্যা বেশি হলেও, সেটি পরিচালনা করতে এককভাবে বিচারকদের দ্বৈত দায়িত্ব রয়েছে। এর ফলে মামলার নিষ্পত্তির গতি কমে যায় এবং মামলা দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হয়।
এই পরিস্থিতি সমাধানে, নতুনভাবে ২০৩টি অতিরিক্ত দায়রা আদালত ও ৩৬৭টি যুগ্ম-দায়রা আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়। এসব আদালত শুধুই ফৌজদারি মামলার বিচার করবে। এর ফলে, বিচারকদের দ্বৈত দায়িত্বের অবসান ঘটবে এবং বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত হবে। এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে জেলা পর্যায়ে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণ পৃথক হয়ে যাবে। এর ফলে, উভয় ধরনের মামলার নিষ্পত্তির হার ও গতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে, যা আগের চেয়ে মামলাজট কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করছে সংশ্লিষ্টরা।