পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে পাকিস্তান ও সৌদি আরব। এই চুক্তির ভিত্তিতে বলা হয়েছে, যদি কোনো এক দেশের ওপর আঘাত করা হয়, তাহলে সেটি উভয় দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে বিবেচিত হবে। এই বিষয়টি বিশেষ করে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
ভারত এই চুক্তির প্রসঙ্গে সতর্কতা প্রকাশ করে জানিয়েছে, পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে এই স্বাক্ষরিত চুক্তি দেশের নিরাপত্তা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতির ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, তা আমরা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখব। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা এই কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তির খবর দেখেছি। এটি দুই দেশের দীর্ঘদিনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া থাকা সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। আমাদের সে বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে, দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারব।”
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই চুক্তি পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে উল্লেখ করা হয়, কেউ যদি একজনের ওপর আঘাত চালায়, তাহলে সেটি দুজনের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের মতো গণ্য হবে। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সৌদি সফরের সময়, যেখানে তিনি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। রিয়াদে এই চুক্তি হওয়ার পর তা নিয়ে বাক্যবিনিময় শুরু হয়।
প্রায় আট দশক ধরে চলা ঐতিহাসিক অংশীদারিত্ব ও ইসলামী ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে এই চুক্তি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সৌদি আরব। এর উদ্দেশ্য হলো প্রতিরক্ষা সহযোগিতা শক্তিশালী করা এবং কোনও সংঘর্ষ হলে যৌথভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। এই বৈঠকে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরও উপস্থিত ছিলেন। মূলত এই চুক্তি এমন সময়ে স্বাক্ষরিত হলো যখন চলতি বছরের এপ্রিলে কাশ্মিরের পেহেলগামে হামলা ও ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের কারণে দু দেশের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে।
অন্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে রিয়াদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক মজবুত হচ্ছে। এই সময়ে ভারত সৌদি আরবের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। মোদির তিনবার সৌদি আরব সফর করার পাশাপাশি, ২০১৬ সালে তিনি দেশটির সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘কিং আবদুল আজিজ স্যাশ’ পেয়ে থাকেন। ভারত ও সৌদি আরবের এই সম্পর্ক আরও গভীর ও দৃঢ় অবস্থানে পৌঁছে পড়েছে।