ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, জরুরি ভিত্তিতে জুলাই সনদের আইনি বৈধতা নিশ্চিত না করে যদি নির্বাচন আয়োজন করা হয়, তাহলে জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধ এড়ানো যাবে না। তিনি আরও বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও দেশের মৌলিক অধিকার, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদার উন্নয়ন এখনো সম্পন্ন হয়নি, এজন্য দ্রুত পরিবর্তন প্রয়োজন।
শুক্রবার বাড্ডা ইউলুপ সংলগ্ন যাত্রাবাড়ি এলাকার মেইন রোডে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত পাঁচ দফা দাবি সংবলিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের শুরুতে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা ও স্বাধীনতার পর থেকে চলমান ব্যর্থতা পরিষ্কারভাবে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার সময় আমাদের মূল তিনটি শ্লোগান ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার। কিন্তু বাস্তবে যারা দেশের ক্ষমতা দখল করে রেখেছে, তারা কোনওটাই পূরণ করতে পারেনি। গত ৫৩ বছর ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা ব্যক্তিরা জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
চরমোনাই পীর উল্লেখ করেন, ২৪শে আগস্টের অভ্যুত্থানে তৈরি নতুন রাজনৈতিক পরিবেশ এখন ইসলামের পক্ষে। দেশের মানুষ বুঝতে পেরেছে, আগের শক্তিগুলি আবার ক্ষমতায় এলে তারা প্রকৃতির অতীতের মতোই আবার জনগণের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে প্রতারণা করবে। তিনি আরো বলেন, এই পরিবর্তনের জন্যই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জনগণের কাছে পরিষ্কার ও শক্তিশালী নীতিমালা-আদর্শ উপস্থাপন করেছে। আমাদের নীতি-আদর্শ নিশ্চিত করে সকল শ্রেণির মানুষের ন্যায়, মর্যাদা ও সাম্যের অধিকার। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যে নীতি-আদর্শ রেখেছেন, তার বাইরে কেউ কখনো শান্তি বা মুক্তি পাবে না। একারণে আমাদের আন্দোলন শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি একটি নৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের আন্দোলন।
সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম আরও বলেন, আমরা চাই, দেশের প্রতিটি নাগরিক তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হোক। যারা ক্ষমতা দিয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ, তাদের জন্য পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে এই পরিবর্তন আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে। আমাদের লক্ষ্য কেবলমাত্র রাজনৈতিক ক্ষমতা নয়, বরং দেশের প্রতিটি মানুষের ন্যায় ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা।
সমাবেশে তিনি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নাগরিক অধিকার, সুষ্ঠু নির্বাচনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি জানান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঐক্যবদ্ধভাবে নীতি-আদর্শের পথ ধরে জনগণের অধিকার রক্ষা ও দেশের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ চালিয়ে যাবে।