দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও উচ্চতায় ফিরেছে এবং বর্তমানে ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, এই রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬.০৮ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বুধবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট গ্রস রিজার্ভ এখন ৩১.০০ বিলিয়ন ডলার, যা আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়ে গেছে। এর আগে এই রিজার্ভ ছিল ৩০.৫৯ বিলিয়ন ডলার, এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী এই মান ছিল ২৫.৭৫ বিলিয়ন ডলার। তবে, দেশের প্রকৃত বা নিট রিজার্ভের হিসাব আলাদা, যা শুধু আইএমএফকে প্রদান করা হয় এবং যা প্রকাশ্যে আসেনা। সেই হিসাবের ধারণা আরও বেশি, যা ২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
একজন অর্থনীতিবিদ বলছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বৈধ পথে প্রবাসী আয় ও রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে স্বস্তি ফিরেছে। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি না করে বরং ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কিনছে। সর্বশেষ ৪ সেপ্টেম্বর বহুজাতিক ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার কিনেছে, जबकि ২ সেপ্টেম্বর ৮ টি ব্যাংক থেকে মোট ৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার সংগ্রহ করা হয়েছিল।
অর্থনৈতিক তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে প্রাপ্ত রেমিট্যান্স দাঁড়িয়েছে ২৪৭.৭৯ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। আগস্ট মাসে এই পরিমাণ ছিল ২৪২.২০ কোটি ডলার বা জরিমানা ২৯ হাজার ৫৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছর মার্চ মাসে রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। পুরো অর্থবছর (২০২৪-২৫) প্রবাসীদের আয় মোট ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরটির তুলনায় ২৬.৮ শতাংশ বেশি।
অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানের আরও তথ্য বলছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশের রিজার্ভ ছিল ১৫.৩২ বিলিয়ন ডলার, এরপর ধাপে ধাপে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০ সালে এটি ৩৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। এরপর কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যেও রিজার্ভ বেড়ে যায় এবং ২০২১ সালের আগস্টে ঢালাওভাবে ৪৮.০৪ বিলিয়ন ডলার রেকর্ড হয়। তবে পরবর্তী সময়ে ডলার সংকটের কারণে এটি কমতে শুরু করে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৩২.৯৪ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪-২৫ শেষে আবার ৩১.৬৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।