চট্টগ্রামে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের সম্পত্তির নথিপত্রের অনুসন্ধানে দুর্নীতিবিষয়ক সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ভয়ঙ্কর অভিযান চালিয়েছে। রোববার ভোরে, রাত সাড়ে তিনটার দিকে শুরু হওয়া এই অভিযানে তারা চালিয়ে গেছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের এক ব্যক্তির বাড়িতে। এই বাড়ির মালিক তার স্ত্রী রুকমিলা জামানের ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইলিয়াস তালুকদারের বাড়িতে এই অভিযান পরিচালিত হয়। দুদক সূত্র জানায়, ওই বাড়ি থেকে প্রায় ২৩ বস্তা গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ও কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এসব নথিপত্রের মধ্যে রয়েছে সাবেক মন্ত্রীর মালিকানাধীন আরামিট গ্রুপসহ তাঁর বিভিন্ন সম্পত্তির ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ দলিল। ১৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর কালুরঘাটে আরামিট গ্রুপের শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে এসব নথিপত্র ইলিয়াস তালুকদারের বাড়িতে আনা হয় বলে দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়। দুর্নীতির অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দেশে বেশ কিছু মামলা চলছে, যার মধ্যে রয়েছে ১২৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ। এই মামলার সূত্র ধরে, গত বুধবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং এলাকায় এক অভিযান চালিয়ে মামলার দুই সহযোগী মো. আব্দুল আজিজ ও উৎপল পালকে আটক করে মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে দুদক জানতে পারে, ভবিষ্যতে ওই নথিপত্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে। অভিযানে, প্রথম দফায়, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতে গিয়ে নথিপত্র সরানো হয় বলে জানা যায়; তবে ওই সময় অভিযান চলাকালে নথিপত্র সরিয়ে নেওয়ায় স্থানটি শুন্য হাতেই ফিরতে হয় তাদের। পরবর্তীতে, রোববার রাত সাড়ে তিনটায় ফের অভিযান চালিয়ে ২৩ বস্তা নথিপত্র উদ্ধার করে দুদক। ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করা যায়নি, ড্রাইভার ইলিয়াস পলাতক রয়েছেন। তেমনি, ওসমান নামে এক প্রতিবেশীর ঘরেও নথিপত্র সরানোর চেষ্টা করা হয়েছিল, যেখানে তিনি পলাতক। এই অভিযানটি সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়। উদ্ধারকৃত নথিপত্রের বিশ্লেষণ চলছে এবং বিস্তারিত তথ্য শীঘ্রই জানানো হবে। এদিকে, আদালতেও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার, দুর্নীতি দমন কমিশন রেড নোটিশ জারির জন্য চট্টগ্রামের বিশেষ আদালতে আবেদন করেছে, যাতে বিদেশে পালানো সাবেক এই মন্ত্রীর জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যায়। আদালত এ বিষয়ে রোববার আদেশ দেবে বলে আশা করা যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, গোপনে দেশ ত্যাগ করেন এই প্রভাবশালী ক্ষমতাধর নেতা।