এশিয়া কাপের গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক হারের পরেও নিশ্চিত ছিল না বাংলাদেশ সুপার ফোরে উঠতে। তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচের ফল। পরিস্থিতি ছিল স্পষ্ট—আফগানিস্তান হারলেই বাংলাদেশ সুপার ফোরে ওঠার সুযোগ পাবে।
সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেট প্রেমীদের বাইরেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে কথার লড়াই সাধারণ ছিল। তবে আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের আগের রাতে এই পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যায়। ফেসবুকে অনেক বাংলাদেশি প্রকাশ্যে শ্রীলঙ্কাকে সমর্থন জানাতে শুরু করেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা একদিনের জন্য মনে করেন তারা ‘ডাই-হার্ড ফ্যান’।
শ্রীলঙ্কাও বাংলাদেশকে হতাশ করেনি। রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে তারা আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে স্বপ্নের সুপার ফোরে পা রাখে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের জন্যও এটি এক ধরণের উৎসাহের বার্তা। তারা এখন এই সুযোগটি কাজে লাগাতে চায় এবং জয় দিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের পথ শুরু করতে চায়। তাদের লক্ষ্য, প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জয় পাওয়া। আজ (শনিবার) দুবাই ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটায় এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি শুরু হবে।
সুপার ফোরে টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশের জন্য শ্রীলঙ্কাকে হারানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর আগে দুই মাসে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে চারবার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ তিনবার শ্রীলঙ্কাকে পরাজিত করেছে, যার মধ্যে অনেকটাই মনে করা হয় তারা শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়দের খেলার ধরন ও পিচের এইচএম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যার সাহায্যে সাম্প্রতিক তথ্যসমূহকে কাজে লাগাচ্ছে।
এশিয়া কাপে মোট ১৮ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে লঙ্কানরা ১৫ বার জিতেছে, তিনবার ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ চারবার শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়েছে, যেখানে দু’বার জয় পেয়েছে। প্রথম আসরে, ২০১৬ সালে, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৩ রানে জিতেছিল। ২০২২ সালে তাঁরা বাংলাদেশকে দুই উইকেটে হারিয়ে প্রতিশোধ নেয়। সেই আসরেই শ্রীলঙ্কা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
আজকের ম্যাচের আগে বাংলাদেশ কিছুটা বিশ্রাম পেয়েছে। গ্রুপপর্বে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের পর তারা চার দিন বিশ্রাম নিয়েছে। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার জন্য কঠিন এই সময়টা হয়েছে—তাদের আরও দুই ম্যাচ খেলতে হয়েছে ঘামের গরম আবহাওয়া আর দ্রুত সময়ে। পাশাপাশি, তাঁরা দুবাই থেকে আবুধাবি যেতে বাধ্য হয়েছে, যেখানে উইকেট খেলা কঠিন হয়ে উঠেছে। এবার দেখা হবে, দুবাইয়ের স্পোর্টিং উইকেটে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারেন কি বাংলাদেশ।
নাম ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশের স্কোয়াডে অখণ্ডনীয় নেতা লিটন দাস উইকেটরক্ষক হিসেবে থাকছেন, এছাড়া তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ Hamiltonে, ইমন, সাইফ হাসান, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি, শামিম হোসেন, নুরুল হাসান, শেখ মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান, শরিফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
শ্রীলঙ্কার স্কোয়াডে অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা থাকছেন, অন্য খেলোয়াড়রা হলো পাথুম নিশাঙ্কা, কুশাল মেন্ডিস, কুশাল পেরেরা, নুয়ানিডু ফার্নান্দো, কামিন্দু মেন্ডিস, কামিল মিশারা, দাসুন শানাকা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, দুনিথ ভেল্লালাগে, চামিকা করুনারুত্নে, মাহিশ থিকসানা, দুশমান্থ চামিরা, বিনুরা ফার্নান্দো, নুয়ান থুশারা ও মাথিশা পাথিরানা।