বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্পষ্ট করে বলেছেন, এবারের নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হবে। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী ও দলের শীর্ষ উপদেষ্টারাও এই মাধ্যমে নির্বাচনের পক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়েছেন। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, শত্রুরা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে নিয়ে যেতে চাইছে, যা প্রতিরোধ করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদপত্র ‘ঠিকানা’-তে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলার সময় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন অবশ্যই ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে। তবে আমাদের দেশের মধ্যে সর্বত্র যে অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে, সেটি দূর করতে হবে। সবাই যেন বিশ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে এগিয়ে যায়।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ড. ইউনূসও নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করেছেন এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে দৃঢ় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলও জানে যে আসন্ন নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাবাহিনী নির্বাচনকালীন সময়ে সতর্ক থাকলেও বাংলাদেশে সমস্যার সরল সমাধান এখনো আসেনি। শত্রুরা দেশকে অস্থিতিশীল রাখতে চাচ্ছে, এতে দেশের স্থায়িত্ব ও আস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তিনি বলেন, ‘মব ভায়োলেন্স, বাড়িঘর ধ্বংস এবং কারখানা জ্বালানোর মত ঘটনা এখন অনেক পরিকল্পিতভাবে ঘটছে।’
মির্জা ফখরুল আরও যোগ করেন, ‘অপ্রত্যাশিতভাবে ১৫ বছরের রাজনৈতিক বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে যার ফলে সাধারণ মানুষ ও মিডিয়ার মধ্যেও অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে, যা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে হবে। এখন বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হলো মানুষের মধ্যে আস্থা স্থাপন করা।’
যদিও এনসিপি ও জামায়াত নির্বাচন নিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করে, তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো সবসময় আলোচনা করে কিছু অর্জন করার চেষ্টায় থাকে। অবশ্য কিছু দাবি বাস্তবায়ন সহজ নয়, কিন্তু ইতোমধ্যে বহু আলোচনা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে।’
বিএনপি মহাসচিব চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে সবচেয়ে মারাত্মক সমস্যার নাম হলো—মব ভায়োলেন্স। কেউ কারো বিরুদ্ধে আক্রমণ, বাড়ি ভাঙা, কারখানা পুড়ানোর কর্মকাণ্ড এখন খুব পরিকল্পিতভাবে ঘটছে। এটি আগে এতটা দেখতে পাওয়া যায়নি। তিনি মনে করেন, একটি পক্ষ এই সব ঘটাচ্ছে এবং তারা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও স্থায়িত্বে বিশ্বাস করে না। তারা চায় না বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াক শক্তভাবে, বরং অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়।