অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর শীর্ষ নেতারা। তাদের এই সফর নিয়ে বেশ কিছু রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে সম্প্রতি নিউইয়র্কের বিমানবন্দরে এনসিপি নেতা আখতার হোসেনের ওপর প্রবাসী আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলার ঘটনাটি আলোচনায় আসে।
ঘটনার সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও এনসিপি নেত্রী ডা. তাসনিম জারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তবে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকের ধারণা, হয়তো তাকে সরিয়ে রাখা হয়েছিল বা তিনি আগে থেকেই ঘটনাটি জানতেন। এসব জল্পনার ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রদান করেন।
সাক্ষাৎকারে তাহের জানান, শুরুতে আমাদেরকে প্রধান উপদেষ্টার বহরে নেওয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে গাড়িতে ওঠানো হয়েছিল। কিন্তু ভিসার জটিলতার কারণে পরে আলাদাভাবে যেতে হয়। সরকারি প্রতিনিধি দলের ভিসা জি-ওয়ান ক্যাটগরির ছিল, যেখানে ফিঙ্গারপ্রিন্টের প্রয়োজন হয় না। অন্যদিকে আমাদের ভিসা ছিল ট্যুরিস্ট ক্যাটগরির, যেখানে ফিঙ্গারপ্রিন্ট করতে হয়। এ কারণে যোগাযোগে কিছু সমস্যা হয়। এর ফলে আমরা হেঁটে ইমিগ্রেশনে যাই।
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তখনও আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন এবং প্রায় ১০ মিনিটেরও বেশি সময় তিনি পরিস্থিতি দেখছিলেন। তবে সমন্বয়ের অভাবে আমরা একসঙ্গে বের হতে পারিনি।
বাংলাদেশ মিশনের ভূমিকা নিয়েও তিনি সমালোচনা করেন। বলেন, মিশনের উচিত ছিল আমাদের যথাযথভাবে জানানো এবং সার্বিক সমন্বয় করা। যদি আমরা সবাই একসঙ্গে বের হতাম, তাহলে এই ধরনের ঘটনা ঘটত না। মিশনের ব্যর্থতার কারণেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
প্রবাসী আওয়ামী লীগ কর্মীরা যখন এনসিপি নেতা আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করেন, তখন সেখানে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তাসনিম জারা উপস্থিত ছিলেন। তবে তাকেই দেখা যায়নি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, তাই আমাদের কিছুটা আগাম আশঙ্কা ছিল। তবে তখন কি ঘটছে তা বুঝতে পারছিলাম না।
তাহের এও বলেন, আমি নেতাদের কাছে ছিলাম এবং আমাদের কিছু ছেলেরা স্লোগান দিচ্ছিল, ‘তাহের ভাই জিন্দাবাদ’। আমি বলেছিলাম, ফখরুল সাহেবের নামেও স্লোগান দিতে, যাতে তিনি বিব্রত না হন। কিন্তু তখন তারা উত্তেজিত ছিল এবং আমার কথা শুনছিল না। পরে আমি কিছুটা দূরে সরে দাঁড়াই। এরপর আমাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় এবং ফুল দিয়ে সম্মানিত করা হয়। আমি কয়েক মিনিট বক্তব্যও দিই। এই সময়ে ডিম নিক্ষেপের ঘটনাটা ঘটে।
তিনি আরও জানান, টিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গেছে, আখতার হোসেনকে রক্ষা করার চেষ্টা করা দুজন আমাদের কর্মী ছিলেন। কিন্তু আখতারের ওপরে হামলার ঘটনাটি দুঃখজনক ও দুঃখজনক ঘটনা।