বিশ্ব বাজারের অস্থিরতা এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দেশে স্বর্ণের দাম এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। এবার দেশীয় বাজারে ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৯১ হাজার ১৯৬ টাকায় নতুন করে নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস), যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম রেকর্ড। এই দাম সোমবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়েছে, এবং মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশের বাজারে তেজাবি বা পিওর গোল্ড স্বর্ণের মূল্যে বিপুল বৃদ্ধি ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন দামে স্বর্ণ বিক্রি শুরু হবে। নতুন দাম অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটের সাধারণ ভরি স্বর্ণের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ১৯৬ টাকা। এছাড়াও, নিউ ওয়ার্ল্ডের মূল্য অনুযায়ী ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি দাম হবে ১ লাখ ৮২ হাজার ৪৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪২৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৭৯৭ টাকায়।
বাজুসের আরেকটি তথ্য অনুযায়ী, স্বর্ণ বিক্রির মূল্যের সঙ্গে সরকারি নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বাজুসের ৬ শতাংশ ন্যূনতম মজুরি যোগ করতে হবে। এর পাশাপাশি গহনার ডিজাইন ও মান অনুযায়ী মজুরির ব্যয় ভিন্ন হতে পারে।
বিশ্ববাজারে এক আউন্স সোনার দাম এখনো কখনো ৩ হাজার ৭০০ ডলার অতিক্রম করেনি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এক দিনে ৩৪ ডলার দাম বৃদ্ধির ফলে এক মাসে সোনার দাম বেড়েছে ১০.৩৫ ডলার। এক মাসের মধ্যে, প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ৪০০ ডলার বেড়ে গেছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে, যখন আন্তর্জাতিক বাজারে এক আউন্স সোনার দাম ছিল ৩ হাজার ৬৯০ ডলার, তখন দেশের বাজারে মূল্য নির্ধারণের পূর্বে এক হস্তান্তর হয়। এরপরবিশ্ববাজারে দাম কমে গেলেও আবার ফিরতে থাকায় বিভিন্ন সময়ে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধি পায়।
বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বাজুসের স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক-সংক্রান্ত ঝামেলা, চীন, রাশিয়া ও ভারতের সঙ্গে চলমান বৈঠক, এবং এই সব কারণে ডলারের সার্বিক মূল্যপ্রভাব সফল হচ্ছে। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের উত্তেজনা এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতার জন্যও বিভিন্ন দেশ সোনা কিনে রিজার্ভ করে চলেছে। এর ফলে সরবরাহ কমে যাওয়ায় সোনার দাম ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, সোনার দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের জুয়েলারি ব্যবসায় মন্দা শুরু হয়েছে, দেশের স্বর্ণের বাজারের আকার সংকুচিত হচ্ছে।