বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা প্রাণপণে চেষ্টা করেছেন নিজেদের সেরা সুবিধা দেওয়ার জন্য, কিন্তু লক্ষ্য ছিল মাত্র ১৩৪ রান। এই সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। উইকেটে এসে তারা প্রতিপক্ষের মনোবল ভাঙার জন্য ঝুঁকি নিয়ে শট খেলতে থাকেন, কিন্তু মাঝে মাঝে ভুলের কারণে উইকেট হারিয়েছেন। এমন ব্যাটিং দেখেই ধারাভাষ্যকক্ষে বসে কমেন্টেটর সুনীল গাভাস্কার মন্তব্য করেছিলেন, “বাংলাদেশের ব্যাটাররা এখানে সবাই হিরো হওয়ার চেষ্টা করেছেন।” টপ অর্ডার থেকে মিডল অর্ডার পর্যন্ত সবাই একই রকম ভুল করে সাজঘরে ফিরেছেন, যার ফলে বাংলাদেশের চোট লেগেছে অধিক। ২৫ বলে ৩০ রান করে দলের জন্য কিছুটা সান্তনা বেঁচে থাকা শামীম হোসেন পাটোয়ারি চার্ট তার ইনিংসের মাধ্যমে। বাঁহাতি এই ব্যাটারটির সামান্য ইনিংসটি অবশ্য বাংলাদেশের হারের ব্যবধান কমিয়েছে। অবশেষে পাকিস্তানের কাছে ১১ রানে হার মানে বাংলাদেশের দল, যা তাদের এশিয়া কাপ থেকে বিদায়ের কারণ হয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান এই জয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেছে। এশিয়া কাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ-পাকিস্তান মুখোমুখি হচ্ছে ফাইনালে, যেখানে ভারতের সঙ্গে ষোলকান্না করবেন পাকিস্তান। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এই ম্যাচের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্য ছিল ১৩৬ রান। শুরুতেই বাংলাদেশ আরম্ভ ভালো করে না, প্রথম ওভারে পারভেজ হোসেন ইমন উইকেট হারান, যখন তিনি শাফিন আফ্রিদির শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগে নাওয়াজকে ক্যাচ দেন। তিনি প্রথম দুটি বলেই কোনো রান করতে পারেননি। চাপ কমাতে সাইফ উজ্জীবিত করেন হারিস রউফের ওভার থেকে ছক্কা আর চার মারার মাধ্যমে। তবে পঞ্চম ওভারে তৌহিদ হৃদয় যদি একদম ঠিকঠাক করেন, তাহলে তিনি ফিরতে পারতেন, কারণ তিনি পয়েন্টে বল ঠেলে দিয়ে রান নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বলফিল্ডারের হাতে চলে যায়। উল্টো, সাইফ দৌড়ে এসেছেন এবং হৃদয় দৌড় না দেয়ায় সাইফ নন স্ট্রাইক রান আউট হতে পারতেন। দুর্ভাগ্যবশত, পাকিস্তানের ফিল্ডারদের অদক্ষতায় তিনি জীবিত থাকেন। তবে পরের বলেই হৃদয় আউট হন। সাহস দেখানোর চেষ্টা করে সাইম আইয়ুবের ক্যাচ দিয়ে সাইফের আউট হয়েছেন। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে সাইফ আশা অনুযায়ী রান করতে পারেননি। হারিস রউফের বল মোকাবেলা করতে গিয়ে তিনি লিডিং এজ নিয়ে ক্যাচ দেন ১৮ রানে। এই ব্যর্থতার কারণে বাংলাদেশ পাওয়ার প্লে-তে তিন উইকেট হারিয়েছে, স্কোর দাঁড়ায় ৩৬ রান। ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন করা হলেও দলের প্রভাব পড়েনি। নাওয়াজের ডেলিভারিতে ব্যাট করে ভিন্নধর্মী কিছু করতে চাওয়া হুসাইন তালাতের হাতে ক্যাচ দেয়। তিনি ১০ বলে ১১ রানে আউট হন। এরপর সোহান ও শামীম জোট বেঁধে একটু পরিস্থিতি ঘুরিয়ে আনতে চান, কিন্তু তারা সফল হননি। সোহান ২১ বলে ১৬ রান করে আউট হন, আর শামীমও শেষ মুহূর্তে ফিরেছেন। বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ১২৪ রানে অলআউট হয়ে গেছে। পাকিস্তানের হয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন শাহীন আফ্রিদি ও হারিস রউফ। এই জয়ে পাকিস্তান এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেছে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ভারতের সঙ্গে হবে।