এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠার প্রথম সুযোগে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের পারফরমেন্স প্রত্যাশিত নয় বলে অনেকের মনে হয়েছিল। ফলে, সুপার ফোরে পাকিস্তানের সঙ্গে নিজেদের শেষ ম্যাচটি এখন তো যেন এক অলিখিত সেমিফাইনালে পরিণত হয়েছে। ফাইনালে পৌঁছানোর জন্য উভয় দলের জন্যই এখন সহজ সমীকরণ, যারা এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জিতবে, তারাই মূল টুর্নামেন্টের মহারণে অংশ নেবে। আজ ২৫ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার, বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই মানুশের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।
এশিয়া কাপের গ্রুপপর্বে বাংলাদেশের ফাইনালে উঠার সম্ভাবনা খুব বেশি মনে হয়নি। তবে সুপার ফোরে প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বাংলাদেশের আশার বাতিগুলি প্রজ্জ্বলিত হয়েছে। ওই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখিয়ে বেশ আশাবাদ জুগিয়েছে, যা পাকিস্তানের বিপক্ষে অন্যান্য ম্যাচেও দেখা গেছে। বিশেষ করে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে, যখন পাকিস্তানের স্বাভাবিক ধারাবাহিক ব্যাটিংয়ে কিছু দুর্বলতা দেখা গেছে, তখন বাংলাদেশের বোলিং বিভাগ কিছুটা আশা জাগিয়েছে।
পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে, তবে, এখনো অনেক অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে। গ্রুপপর্বে ভারতের বিপক্ষের পর বিগত ম্যাচে তাদের পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা ছিল না। ভারতীয় দলের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপ বেশ দুর্বল হতে দেখা গেছে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে যে মাত্র ১৩৪ রান তাড়া করতে হয়নি, শেষপর্যন্ত ১২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান কিছুটা চাপের মুখে পড়েছে। পরে শেষ দিকে হুসাইন তালাত ও মোহাম্মদ নওয়াজের জুটি পাকিস্তানের বিপদ থেকে খানেকটা মুক্তি দিয়েছে। বাংলাদেশের বোলাররা এখন পাকিস্তানের এই ব্যাটিং দুর্বলতা কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করছে।
বাংলাদেশের বোলিং দুর্দান্ত প্রশংসা পেয়েছে। গতকালও ভারতের বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে তারা গড়ে ১২ গড়ে ৭২ রান দিয়ে, ১০.১ ওভারে দলীয় ১শ পূর্ণ করে ফেলেছে। তাতে সূর্যকুমার যাদবের দল ১৬৮ রানের লক্ষ্য পৌঁছায়। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান সাইফ হাসানের ছাড়া অন্য কেউ ধারাবাহিকভাবে কিছু করতে পারেননি, যা আশার সঙ্গে কিছু হতাশার ছোঁয়া দেয়। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস কিছুটা বেড়েছে। তাদের মাটিতে জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাকিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারানোর স্মৃতি এখনও জ্বলজ্বল করছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক জয় লাভের মধ্য দিয়ে এই দলটি এশিয়া কাপের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে মোট টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এখনো বাংলাদেশ পিছিয়ে, যেখানে পাকিস্তান ২০ জয়, বাংলাদেশের জয় মাত্র ৫টি।
ভারতসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশের পরিকল্পনা নিয়ে গত ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া জাকের আলি অনিক বলেন, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে আসছি। কালকের (পাকিস্তান) ম্যাচেও সেই সাহস নিয়ে খেলব। ফাইনালে উঠা ও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই খেলছি। বোলিং ও ব্যাটিং দুই বিভাগেই আমরা ভালো করেছি। অবশ্যই আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ব্যাটিংয়ে ভালো করে ম্যাচটি জেতা। আশা ছাড়ার কিছু নেই।’
অন্যদিকে, পাকিস্তানের তারকা পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি মনে করছেন, বাংলাদেশকে হারানোর জন্য পাকিস্তানকে নিজেদের সেরাটা দিয়েই খেলতে হবে। বাঁ-হাতি এই পেসার বলেন, ‘বাংলাদেশ ভালো দল। বেশ কিছুদিন ধরে তারা ভালো খেলছে। শক্তিশালী দলের সঙ্গে খেললে প্রথম ধাক্কাটা আপনাকেই দিতে হবে। আমাদের যত বিভাগ, ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং-তিনই ভালো খেলতে হবে, যাতে আমাদের জেতার সুযোগ তৈরি হয়।’