সংগীতজীবনের ২৫ বছর সম্পূর্ণ করলেন জনপ্রিয় গায়ক ও অভিনেতা তাহসান খান। তার এই বিশাল সংগীত Canvas পূরণে তিনি রজত জয়ন্তী উদযাপন করছেন। সেই উপলক্ষে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় একটি সংগীত সফরে অংশ নিচ্ছেন, যেখানে প্রতিটি ধাপে তিনি দর্শকদের আনন্দ ও ভাবাবেগে মিশে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এই সফরে তিনি অ্যাডিলেড, ব্রিসবেন, সিডনি, মেলবোর্ন এবং পার্থে কনসার্ট ঘোষণা করেছেন। তবে মেলবোর্নের কনসার্টের আগে গানের আসরে এসে তিনি বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত ঘোষণা দেন। তাহসান জানান, এটি তাঁর শেষ কনসার্ট কিংবা শেষ ট্যুর নয়, বরং ধীরে ধীরে সংগীতের ক্যারিয়ার থেকে বিদায় নিতে চান। এতদিন ধরে তার জন্য এই সিদ্ধান্তের খবর শুনে ভক্তরা বেশ মুষড়ে পড়েন, তবে তাহসান তাদের শান্ত করে বলেন, ‘এটি স্বাভাবিক।’ তিনি আরো মজা করে যোগ করেন, ‘কামিয়ে বড় হওয়া ডাড়ি নিয়ে স্টেজে লাফালে কি হয়!’ এরপর তিনি গভীরভাবে বলেন, ‘অভিনয় থেকে অনেক বছর হয়েছে বিরতি নিয়ে, এবার গান থেকে বিরতি নেওয়ার সময় হয়েছে। এই রাতটি আপনাদের জন্য একটি স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকবে, হয়তো আর দেখা হবে না মেলবোর্নে, তবে আমি অবশ্যই আপনাদের ভালোবাসবো ও মনে রাখবো।’ তাহসানের এর পরিপ্রেক্ষিতে তার সঙ্গীত জীবনের দীর্ঘ ২৫ বছরের পথচলা তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৯৮ সালে অলটারনেটিভ রক ব্যান্ড গঠন করে তার সংগীতজীবন শুরু করেন তিনি। তবে তিনি বেশি দিন ওই ব্যান্ডের সঙ্গে থাকেননি। ২০০৪ সালে ব্যান্ড থেকে বেরিয়ে একক ক্যারিয়ারে মনোযোগ দেন। তার অ্যালবামগুলো যেমন ‘কথোপকথন’, ‘কৃতদাসের নির্বাণ’, ও ‘ইচ্ছে’ খুবই জনপ্রিয়। মোট সাতটি অ্যালবাম প্রকাশ পেয়েছে তার। তার গাওয়া অসংখ্য হিট গান মধ্যে রয়েছে ‘আমার পৃথিবী’, ‘এখনো’, ‘ঈর্ষা’, ‘আলো’, ‘প্রেম তুমি’, ‘প্রেমাতাল’, ‘হঠাৎ এসেছিলে’, ও ‘কে তুমি’। পরবর্তীতে তিনি বেশ কয়েক বছর ‘তাহসান অ্যান্ড দ্য সুফিজ’ ব্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি ‘তাহসান অ্যান্ড দ্য ব্যান্ড’-এর সঙ্গে পারফর্ম করেন। সংগীতের পাশাপাশি তিনি অভিনয় ক্ষেত্রেও জনপ্রিয়। নাটক, ওয়েব কনটেন্ট এবং সিনেমায় তার উপস্থিতি বেশ প্রশংসিত। তবে কিছু বছর ধরে তিনি অভিনয় থেকে দূরে থাকছেন। সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল গত বছর ‘বাজি’ ওয়েব সিরিজে। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি দুই বছরের বিরতির পর ফের চলচ্চিত্রে ফিরে আসেন। এছাড়াও তিনি ‘ফ্যামিলি ফিউড বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানের প্রথম সিজন উপস্থাপনা করেন। গত বছর তিনি কণ্ঠনালির সমস্যার কথা প্রকাশ করেন। জানায়, ছয় বছর ধরে তিনি কণ্ঠনালির জটিলতায় ভুগছেন। তার ভোকাল কর্ডে এক ধরনের রোগ ধরা পড়ে, যা মূলত ২০১৮ সালে শুরু হয়। এই সমস্যা থাকায় তিনি এখন আর আগের মতো স্বাচ্ছন্দ্যে গান গাইতে পারেন না। তার ভয়, হয়তো আর গায়তে পারবেন না। এই পরিস্থিতিতে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন এনেছেন। খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন করছেন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে জানান, ধীরে ধীরে তার গানের ধারা কমে আসছে। ভক্তরা তার এই পরিস্থিতি বুঝে দোয়া ও সমর্থন করবেন, এটাই তার প্রত্যাশা। তিনি আশাবাদী, এই সমস্যার কারণে যদি কনসার্ট বা লাইভ পারফর্মেন্স কমে যায়, তবে তিনি তার ভক্তদের ভালোবাসায় কৃতজ্ঞ থাকবেন ও চিরকাল মনে রাখবেন।