বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল তাদের প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের আসরে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে। এই গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টটি আগামী বছর ১ মার্চ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য বাংলাদেশ ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে। তীক্ষ্ণ ও নিবিড় অনুশীলনের জন্য শনিবার ২৯ জন নারী ফুটবলার চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ আরও জানান, মেয়েরা আরও উন্নত ও নিবিড় অনুশীলনের জন্য চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ইয়াংওয়ানের ব্যবস্থাপনায় কোরিয়ান ইপিজেডে ২০ দিন প্রশিক্ষণ নেবে। এই ট্রেনিংয়ের আয়োজকতা পুরোপুরি ইয়াংওয়ানই করা হচ্ছে, যেখানে খরচার দায়িত্বে ফেডারেশন নেই। ১৬ অক্টোবর সেখান থেকে ঢাকায় ফিরে আসবেন ফুটবলাররা, আর ভুটান থেকে থাকা ১০ ফুটবলার ১৭ অক্টোবর দেশে ফেরত যাবেন। এরপর ঢাকায় ৪-৫ দিনের মধ্যে আবার অনুশীলন করে দল থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় দুই ম্যাচ খেলতে।
অন্যদিকে, এশিয়া কাপের জন্য বাফুফের পরিকল্পনায় পরিবর্তন এসেছে। মূলত, নভেম্বরে ঋতুপর্ণাদের জন্য জাপানে অনুশীলনের পরিকল্পনা ছিল, তবে জাপান ফুটবল এসোসিয়েশন কর্তৃক নির্ধারিত সময়টি অনুকূল না হওয়ায় এই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। কিরণ বলছেন, ‘জাপান ২০-৩০ নভেম্বর আমাদের যেতে বলেছিল, আমরা তখন ঢাকায় ফিফা উইন্ডোতে ত্রিদেশীয় ম্যাচ খেলব বলে ঠিক করেছিলাম। ফলে সেখানে যেতে পারছি না।’
বাফুফে সভাপতি ঋতুপর্ণাদের এই এশিয়া কাপকে ‘মিশন অস্ট্রেলিয়া’ বলে অভিহিত করেছেন। মূল পরিকল্পনায় ছিল ১ সেপ্টেম্বর থেকে অনুশীলন শুরু করা, যা তিন সপ্তাহ পিছিয়ে গেছে। আবার জাপানে অনুশীলনের পরিকল্পনাও ভেস্তে গিয়েছে। কিরণ বলেন, ‘আসলে পিটার মাঝেমধ্যে অসুস্থ থাকায় কিছুটা দেরি হয়েছে। এতো কিছু হয়তো এখন এককভাবে নিয়ে পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে হবে। তবে আমাদের এগিয়ে যেতেই হবে।’ জুলাইয়ে নারী এশিয়া কাপ নিশ্চিত হওয়ার পর ভারত রোডম্যাপও কয়েক দিন পরে প্রকাশ করে। দুই মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বাফুফের পরিকল্পনা এখনও প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে। অনেক কিছু এখনো আলোচনার মধ্যেই।
৫-২০ ডিসেম্বর কলম্বোতে নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত হবে নারী সাফ ক্লাব। এতে বাংলাদেশের নাসরিন স্পোর্টিং অংশ নেবে। এই টুর্নামেন্টে খেলা হবে ভারত, নেপাল ও ভুটানের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবগুলোর। জাতীয় দলের ফুটবলারদের নাসরিনের হয়ে খেলার বিষয়ে কোচের সঙ্গে এখনো আলোচনা হয়নি, তবে বাফুফের পরিকল্পনা রয়েছে।
বাফুফে ডিসেম্বরের নারী ফুটবল লিগ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। এই লিগে এশিয়া কাপে স্কোয়াডে থাকা ফুটবলারদের খেলার সুযোগ থাকছে। ফেডারেশন ভাবছে নারী ফুটবলারদের ফেডারেশনের ক্যাম্পে ও কোচের অধীনে অনুশীলনে রাখা। তবে, ক্লাবগুলো এই পরিকল্পনায় দ্বিমত প্রকাশ করছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে ফেডারেশন ক্লাবগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে।
এদিকে, ভুটান নারী লিগে এখনো খেলে চলেছেন পাঁচ ফুটবলার—সাবিনা খাতুন, মাসুরা পারভীন, সানজিদা আক্তার, কৃষ্ণা রাণী ও সুমাইয়া মাতসুসিমা—যারা এখনো বাফুফের স্কোয়াডের অংশ নন। এশিয়া কাপের জন্য তাদের ডাকার বিষয়ে কোচ পিটার বাটলারকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, বলে জানিয়েছেন কিরণ, ‘এটি টেকনিক্যাল বিষয়। কোচের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’