জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ স্পষ্ট করে বলেছেন, গঠনতন্ত্র ও নির্বাচনী বিধিমালা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন যেসব দলের নির্বাচিত নেতৃত্বকে বৈধ মনে করে, তারাই এই দলের আসল মালিক। তিনি জানান, ‘আমরাই লাঙল প্রতীকের বৈধ মালিক।’ শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গুলশানে একটি জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই বিবৃতি দেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের দাবিদার একজন নন, মালিক নির্ধারণে সমস্যা হচ্ছে।’ এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আজ জাতীয় পার্টি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে৷
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, কিছু পক্ষ বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য ভিন্ন ভিন্ন আবেদন জমা দিচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। তিনি মন্তব্য করেন, ‘নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীক কোনও গোষ্ঠী বা ব্যক্তির হওয়া সম্ভব নয়; এটি কেবল দলের গঠনতন্ত্র ও আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অনুমোদনের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, নির্বাচন কমিশন আইন, সংবিধান এবং গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।
তিনি উল্লেখ করেন, ৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত দলের দশম কাউন্সিলে আমি সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছি। এরপর, দলটির নতুন কমিটি নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিয়েছি। কাদের আর কেউ এখন থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলে স্বীকৃতি পায় না।
আনিসুল ইসলাম জোর দিয়ে বলেন, ‘লাঙল প্রতীক আমাদের দলের ঐতিহ্য, জনগণের আস্থা এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতীক। এই প্রতীক শুধুমাত্র বৈধ নেতৃত্বকেই দেওয়া উচিত। বিভ্রান্তিকর আবেদনগুলো সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।’
জিএম কাদেরের সাম্প্রতিক মন্তব্যের বিষয়ে আনিসুল বলেন, কাদের কখন কী বলছেন, তার নিশ্চয়তা নেই। তার বক্তব্য দ্বৈতনীতি ও দলের জন্য ক্ষতিকর।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, তিনি লাঙল প্রতীকের মালিক খুঁজে পাচ্ছেন না। যথাযথ গঠনতন্ত্র অনুসারে, ৯ আগস্ট দলের দশম কাউন্সিলে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে, আইনি দিক দিয়ে তিনি এই প্রতীকের প্রকৃত মালিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি নির্বাচন কমিশন দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বৈধ নেতৃত্বকে স্বীকৃতি দেবে। এই সিদ্ধান্ত হবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য অপরিহার্য।’
তাদের উদ্দেশে হাওলাদার উল্লেখ করেন, ‘জাতীয় পার্টির মালিকানা আমাদের তৃণমূল নেতাকর্মীদের হাতে ফিরিয়ে দিতে চাই। কেউ একক নেতৃত্বে পার্টি চালাতে পারবে না। পল্লীবন্ধু এরশাদের প্রতিষ্ঠিত পার্টি এখনো জোটীতভাবে পরিচালিত হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, সফিকুল ইসলাম সেন্টু, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।