সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাংলাদেশে অবৈধভাবে শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ ও ভার্চুয়াল বৈঠক চালিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত দুটি জনপ্রিয় অ্যাপ—টেলিগ্রাম ও বোটিম—বন্ধ করে দেওয়া হবে। নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পর, এই দুটি অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কাউন্সিলের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ৫ আগস্ট তারা ভারতে পালিয়ে গিয়ে অবস্থান নেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ভারতে থাকা অবস্থায় তারা ভার্চুয়াল বৈঠকের মাধ্যমে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে নানা নির্দেশনা দিচ্ছেন। এই বৈঠকগুলি পরিচালনা করার জন্য তারা বিভিন্ন অনলাইন অ্যাপের ব্যবহার করছেন।
জানা গেছে, রাজধানীর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন আন্দোলনমূলক মিছিল থেকে গত বুধবার ২৪৪ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়, এর মধ্যে দেড় শতাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ ও বৈঠকে অংশ নিত। এই বিষয়টি এখন শেছে আলেচ্য হয়েছে, রোববারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, রাতে এই দুটি অ্যাপের ব্যবহার কমানোর জন্য নানা উপায় খতিয়ে দেখা হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দুই অ্যাপের মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীরা দেশ বিরোধী কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, টেলিগ্রাম ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগের অন্যতম জনপ্রিয় অ্যাপ, যার প্রতিষ্ঠাতা রুশ নাগরিক পাভেল দুরভ। অন্যদিকে, বোটিম হলো একটি জনপ্রিয় আড্ডা ও অর্থ লেনদেনের অ্যাপ, যার মূল কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্রে।
বৈঠকের সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের মোবাইল ফোনগুলোতে জব্দ করা হয়েছে অনেক তথ্য। প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে, দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী টেলিগ্রাম ও বোটিম ব্যবহার করে শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ ও ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করে তারা দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন বলে সন্দেহ প্রকাশ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে, সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির ধারণা, নির্বাচন প্রস্তুতির মধ্যে থাকতে এই ধরনের যোগাযোগের মাধ্যমে অর্থবহ পরিকল্পনা চালানো সম্ভব। সেই জন্য, সংশ্লিষ্ট সভায় এই দুটি অ্যাপের ব্যাপক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে জঙ্গি ও অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধির আশঙ্কা কমানো যায়।