আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী মাসের শুরুতেই বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এই লঘুচাপের ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল যেমন পশ্চিমবঙ্গ, পশ্চিমবাংলা, বাংলাদেশ উত্তরাঞ্চল এবং আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকাগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে। এরই প্রভাবে দেশের নিম্নাঞ্চলগুলো সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে প্রকাশিত আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পূর্ব উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বিস্তৃত। বর্তমানে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর একটু কম সক্রিয় থাকলেও, উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি সক্রিয় অবস্থানে রয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগরে নতুন করে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকাসহ রাজশাহী, রংপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ এবং খুলনা বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় দমকা হাওয়া, হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া, কিছু স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণও দেখা দিতে পারে। এই বৃষ্টিপাতের ফলে দিনের তাপমাত্রা দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমতে পারে এবং রাতে তাপমাত্রাও সামান্য হ্রাস পাবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় সর্বোচ্চ ৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর পাশাপাশি রাজশাহীতে ৩৯ এবং বগুড়ায় ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের তথ্য পাওয়া গেছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, লঘুচাপের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চলে ভারী বর্ষণে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে ২ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে ৫ অক্টোবর সকাল ৯টার মধ্যে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার নদীসহ কিছু বড় নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। এই সময়গুলোতে নদীগুলোর পানি সতর্কসীমায় পৌঁছতে পারে, ফলে উপকূলীয় ও নিম্নাঞ্চলগুলোতে সাময়িক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে।
চট্টগ্রাম বিভাগের নদীগুলোর মধ্যে হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, গোমতী ও ফেনী নদীর পানি ১ অক্টোবর থেকে ৪ অক্টোবরের মধ্যে কুমিল্লা, লক্ষীপুর, চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজারে দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। একই সময়ে, নদীর সেতুমুখে সতর্কতা দেখানো হচ্ছে এবং নিম্নাঞ্চলগুলোতে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে।
সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের নদীগুলোর মধ্যে সুরমা, কুশিয়ারা, লুভাছড়া, সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, জিঞ্জিরাম, সোমেশ্বরী, ভুগাই-কংস, মনু, ধলাই ও খোয়াই নদীর পানি ১ অক্টোবর সকাল থেকে ৫ অক্টোবর সকাল পর্যন্ত দ্রুত বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে এই নদীর সংলগ্ন এলাকাগুলোর জলস্তর সতর্কসীমায় পৌঁছাতে পারে এবং স্থানীয় নিম্নাঞ্চলগুলো জলমগ্ন হতে পারে।