খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর মেডিকেল পরীক্ষা থেকে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীর শরীরের ভেতরে এবং বাইরে ধর্ষণের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলার সিঙ্গিনালা এলাকার এক ছাত্রীর অচেতন অবস্থায় ধর্ষণের অভিযোগ উঠলে, তার বাবা তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। পরের দিন, ২৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ সন্দেহভাজন শয়ন শীল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান চিকিৎসক ডা. জয়া চাকমা জানান, ধর্ষণের কোনো আলামত নিশ্চিত করার জন্য নির্ধারিত ১০টি সূচকের মধ্যে সবগুলোই স্বাভাবিক পাওয়া গেছে। এই রিপোর্টে তার পূরণে অন্যান্য চিকিৎসক ডা. মীর মোশারফ হোসেন ও ডা. নাহিদা আক্তার স্বাক্ষর করেছেন।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. ছাবের আহমেদ জানান, এই মেডিকেল রিপোর্ট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, সেনা রিজিয়ন কমান্ডাররা অভিযোগ করেছেন, ইউপিডিএফ এই ঘটনার অপব্যবহার করে পাহাড়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। খাগড়াছড়ি সেনানিবাসে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ বলেন, ধর্ষণের ঘটনা পুঁজি করে ইউপিডিএফ সম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে, যা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ।
গুইমরা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কালাম রানা বলেন, পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মূল দায়ী ইউপিডিএফ। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ঘটনার পর থেকে জুম্ম ছাত্র-জনতা অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়ক অবরোধের ঘোষণা দেয়। তবে দুর্গাপূজা এবং সরকারি আশ্বাসের কারণে এই অবরোধ আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
পূর্বের কয়েক দিনে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। এর পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসনের বিভিন্ন সদস্য ও স্থানীয় লোকজন আহত হয়েছেন। সহিংসতায় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারি অফিস, দোকানপাট, বসতঘর, গুদাম ও মোটরসাইকেল। বর্তমানে খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।