বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা ধর্মের ভিত্তিতে কখনোই রাজনীতিতে বিভাজন চাইনি এবং চাইও না। তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, এই ধরনের বিভাজন করা আমাদের প্রাণে অন্যায়, এবং ভবিষ্যতেও করবে না। আজ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর জিয়া উদ্যানে ওলামা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও শহীদ জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় তিনি এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা একজন ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী দল। আমাদের রাজনীতি হচ্ছে সমন্বয়ের রাজনীতি, যেখানে সব জনগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে চলার লক্ষ্য থাকে। বাংলাদেশের এই ভূখণ্ডে সকলে মিলে একত্র হয়ে শান্তিপূর্ণ জীবনযাত্রার জন্য বাংলাদেশি জাতীয়তার ভিত্তিতে আমরা রাজনীতি করি।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের এই সার্বভৌম ভূখণ্ডে আদর্শের ভিত্তিতে সব ধর্ম, বর্ণ, ভাষা ও সংস্কৃতির মানুষকে নিয়ে আমরা এক দক্ষ সমন্বয়মূলক রাজনীতি করি, যাকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রণয়ন করে। গণতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমেই দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি আরও শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের সবাইকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
সালাহউদ্দিন বলেন, দীর্ঘ সংগ্রাম ও লড়াইয়ের পদক্ষেপে আমরা আমাদের ভোটাধিকারকে কেবলমাত্র প্রায় প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি, তাই আজকের দিনগুলোতে সেই অধিকার আদর্শের পথে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের সব মানুষের মধ্যে একতা ও ঐক্য বজায় রাখতে হবে। সুন্দর এবং উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাই একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন। তিনি এও উল্লেখ করেন যে, বর্তমান সময়ে দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া চায় এবং নির্বাচনের পরিবেশ বেশ চাঙ্গা।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের উন্নয়নের পথে বাধা দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহলে কারা কারা ষড়যন্ত্র করছে, সেটি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। দেশের কিছু শক্তি ও বিদেশি প্রভাবশালী দল সক্রিয় আড়াল থেকে এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তবে বাংলাদেশের জনগণ একত্রিত হয়ে এই ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করবে। গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে দেশের গণতন্ত্রের পথ রক্ষা করতে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে সালাহউদ্দিন বলেন, পিআর (জনসংযোগ) পদ্ধতি দীর্ঘমেয়াদি অস্থিরতার কারণ হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই পদ্ধতির মাধ্যমে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। এতে সরকার স্থির ও দীর্ঘস্থায়ী হয় না, বরং জ্বলন্ত সংসদ ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের মানুষ এই পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে, এবং বিভিন্ন জরিপে দেখা যায়, বেশিরভাগ মানুষ এই পদ্ধতির সমর্থক নয়। এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৬ শতাংশ মানুষ এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে। অন্য একটি জরিপে প্রকাশ পেয়েছে, কিছু দল দাবি করছে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতি চায়। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, পিআর মানে জনসংযোগ বা জনসংযোগের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি, যেখানে সবাই আস্থাশীল। সবাই একযোগে কাজ করলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব।