বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন উল্লেখ করেছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সরকারের সিদ্ধান্তের পরিবর্তে শেষ সিদ্ধান্ত সবসময় জনগণের থাকবে। তিনি বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আজহার শফিক ফাউন্ডেশনের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
জাহিদ হোসেন মনে করেন, জনগণের হাতেই থাকবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা। বিএনপি সবসময় বলেছে, আওয়ামী লীগের বিচার জনগণই করবে। দলের নেতাকর্মীরা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যখন অবজ্ঞাসূচক কথা বলে এবং ২০২৪ সালের গণহত্যা, ভোট রাতে দেওয়ার ষড়যন্ত্র, কিংবা প্রতিহিংসাপরায়ণ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, তখন তাদের জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার সময় এসেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘জনগণ দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রতিনিধিকে নির্বাচন করতে পারেনি। তবে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আমরা চাই, এই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সত্যিকারের প্রতিনিধির নির্বাচন হোক।’
জনপ্রিয়তা ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নতির প্রসঙ্গ তুলে জাহিদ হোসেন বলেন, “১৯৯০ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ১ অক্টোবরকে ‘আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একসময় বাংলাদেশের গড় আয়ু ছিল ৪৭ বছর, যা বর্তমানে বেড়ে ৭৩ বছর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও, সরকারি চাকরিতে প্রবীণদের নির্দিষ্ট বয়সের পরে প্রয়োজনে আর থাকতে দেওয়া হয় না, যদিও দেশের শীর্ষ উপদেষ্টাদের অনেকেই এখন প্রবীণ। আমাদের উচিত, প্রবীণদের জন্য মানসিক ও সামাজিক সমর্থন নিশ্চিত করা।”
সরকারি অফিসে প্রবীণদের নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে জাহিদ হোসেন বলেন, “ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে দেখা যায়, এই বয়সের মানুষকেও লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে হয়, যারা স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে সম্মান পালনায় প্রবীণদের নিরাপদ বৃত্তে রাখা হয়। আমাদের সংস্কৃতি এখনো সেই পর্যায়ে পৌঁছায়নি।”
তরুণ ও প্রবীণ প্রজন্মের মধ্যে সুসম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “আজকের তরুণেরা একদিন বৃদ্ধ হবে। তাই প্রজন্মের মধ্যে বোঝাপড়া ও সম্মান তৈরির প্রয়োজন। জাতি যত বেশি নিজের উত্তরাধিকার ও প্রবীণদের সম্মান করে, ততই তার দীর্ঘ সময় ধরে টিকে থাকার সম্ভাবনা বাড়ে।”
প্রবীণদের সম্মান ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে সরকারের দায়িত্বের ওপর জোর দিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, “সমাজ আমাদের সকলের। প্রবীণদের জন্য আলাদা সুযোগ-সুবিধা ও বাজেট রাখা কোনো বড় বিষয় নয়। তাঁদের যেন সমাজের বোঝা মনে না হয়, বরং সম্মানের সঙ্গে জীবন যাপনের ব্যবস্থা করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।”
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া প্রমুখ।