খাগড়াছড়ির সদর ও গুইমারা উপজেলার সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হয়েছে অশান্তির পরিস্থিতি, যার সূত্রপাত কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে। এই ঘটনার জেরে বুধবার রাতেই পুলিশ তিনটি মামলা দায়ের করেছে। প্রথম মামলাটি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ১৪৪ ধারা তেড়ে হামলা, ভাঙচুর ও সহিংসতার অভিযোগে দায়ের হয়েছে। অন্যদিকে গুইমারা উপজেলায় তিনজনের হত্যাকাণ্ড এবং ১৪৪ ধারা অমান্য করে সংঘর্ষের জন্য আরেকটি মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় প্রায় ১,২০০ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
অপরদিকে, ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠছে খাগড়াছড়িতে। শহর ও উপশহরগুলোতে মানুষের আনাগোনা ও যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। সব ধরনের যানবাহন শান্তিপূর্ণভাবে চলাচল করছে। তবে এখনো খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা কার্যকর রয়েছে।
নাশকতা রোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অস্থায়ী নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের শনাক্তে চেকিং চলছে। পুলিশ সুপার মোঃ আরেফিন জুয়েল জানান, এসব ঘটনার তদন্তে পুলিশ কাজ করছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত যে কেউ মামলা করতে চাইলে তারা মামলা করবেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।
জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, পরিস্থিতি এখনো কিছুটা উদ্বেগজনক থাকায় ১৪৪ ধারা জারি রাখা হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে তা প্রত্যাহার করা হবে। পর্যাপ্ত স্বাভাবিকতা ফিরতে সময় লাগবে।
ঘটনার প্রেক্ষাপটে জানা গেছে, ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সদর থানার সিঙ্গিনালা এলাকায় কিশোরী প্রাইভেট পড়া শেষে ফেরার পথে কয়েকজন যুবক তার উপর হামলা চালিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটায়। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর বাবা থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্তে সন্দেহভাজন হিসেবে শয়ন শীল (১৯) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ধর্ষণের অভিযোগের কারণে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’ নামে একটি সংগঠন তিন পার্বত্য জেলায় অবরোধের ডাক দেয়, যা দীর্ঘদিন চলে। তবে সম্প্রতি তারা অবরোধ তুলে নিয়েছেন। ডাক্তারি পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে, ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে, বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ছাবের।