নতুন নির্বাচনী নির্দেশনা অনুযায়ী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উচিত লাউ ও চিংড়িসহ মোট ৫০টি প্রতীকের তালিকা থেকে নিজের পছন্দের প্রতীক নির্ধারণ করে নিতে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের এ ব্যাপারে অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে দলটি দাখিল করতে পারে।
গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর), ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, তারা এনসিপিকে চিঠি দিয়ে এই নির্দেশ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে, ইসির উপ-সচিব মো. রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দলটির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলামের কাছে পাঠানো হয়।
চিঠিতে জানানো হয়, এনসিপি জাতীয় নাগরিক পার্টি হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে, যা প্রাথমিকভাবে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। দলটির আবেদনপত্রে শাপলা, কলম এবং মোবাইল ফোনের প্রতীকগুলো তালিকাভুক্ত ছিল। তবে বর্তমান নির্বাচন আইন অনুযায়ী, ‘শাপলা’ প্রতীকটি দলটির জন্য বরাদ্দের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নয়।
অতএব, দলটিকে জানানো হয় যে, দেশের প্রার্থীদের জন্য নির্ধারিত প্রতীকের তালিকা থেকে যে কোন একটি প্রতীক পছন্দ করে নিতে, যা দলটির জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তবে যদি দলটি পরবর্তীতে অন্য কোন প্রতীক পেতে চায়, তাহলে তা প্রকাশ করতে হবে।
এমতাবস্থায়, ইসি তাদের নির্দেশ দেয় যে, এই জটিলতা নিরসনে এবারে দলটি নতুন করে প্রতীক নির্বাচন করে নিক। এছাড়া, দলটির নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার জন্য, এই পছন্দটি আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে লিখিতভাবে ইসিকে জানাতে বলা হয়েছে।
নির্বাচনী প্রতীকের তালিকায় থাকা ৫০টি প্রতীক হলো- আলমিরা, খাট, উটপাখি, ঘুড়ি, কাঁপ-পিরিচ, চশমা, দালান, বেগুন, চার্জার লাইট, কম্পিউটার, জগ, জাহাজ, টিউবওয়েল, টিফিন ক্যারিয়ার, টেবিল, টেবিল ঘড়ি, টেলিফোন, ফ্রিজ, তবলা, বক, মোরগ, কলম, তরমুজ, বাঁশি, লাউ, কলস, চিংড়ি, থালা, বেঞ্চ, লিচু, দোলনা, প্রজাপতি, বেলুন, ফুটবল, ফুলের টব, মোড়া, বালতি, কলা, বৈদ্যুতিক পাখা, মগ, মাইক, ময়ূর, মোবাইল ফোন, শঙ্খ, সেলাই মেশিন, সোফা, স্যুটকেস, হরিণ, হাঁস ও হেলিকপ্টার।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথমে এনসিপি শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোনের যেকোনো একটি প্রতীক গ্রহণের জন্য আবেদন জানায়। কিছুদিন পরে, তারা শাপলা অনুষ্ঠানে সংশোধন করে শাখা, সাদা শাপলা বা লাল শাপলা চায় বলে জানায়।
একই সময়ে, ইসি সচিব গণমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তালিকায় শাপলা বা সংশ্লিষ্ট প্রতীকগুলো না থাকায়, এনসিপি এই প্রতীক পাবে না।
এমন পরিস্থিতিতে, একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে এনসিপি ইসিতে এসে শাপলা প্রতীক না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়। তবে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, রাজনীতিবিদরা অনেক কথা বলেন, তাদের অধিকার আছে বলেই জানান, আমরা কোনো জবাব দিতে পারব না।
বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫২টি, যার মধ্যে আওয়ামী লীগসহ। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধনের ব্যবস্থা চালু হয়। এখন পর্যন্ত ৫৬টি দল নিবন্ধন পেলেও, অনেকের শর্ত পূরণে ব্যর্থতা কিংবা আদালতের সিদ্ধান্তে নিবন্ধন বাতিল হয়েছে বলে জানানো হয়।
এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী ও জাগপা আবার ফিরে পেয়েছে তাদের নিবন্ধন। ফলে, মোট ৫৬টি দলের জন্য নিবন্ধিত প্রতীকগুলো বরাদ্দ হয়েছে। অন্যান্য প্রতীকগুলো এখন থেকে নতুনদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে, যারা নির্বাচনী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন।